ডা.মাহমুদ উল্লাহ ফারুকী এমবিবিএস(ঢাকা মেডিকেল কলেজ), বিসিএস(স্বাস্থ্য), এমএস(ইএনটি), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।
ইদানিং একধরনের রোগী সচরাচর পাওয়া যাচ্ছে যারা অভিযোগ করেন, “নাক দিয়ে হলুদ বা সবুজ প্রকৃতির গন্ধযুক্ত ময়লা বাহির হয়”। এই একটি মাত্র বাক্য শুনে বুঝতে অসুবিধা হয়না রোগটা “এট্রফিক রাইনাইটিস”
এট্রফিক রাইনাইটিস_কি?
এটা একধরনের নাকের প্রদাহ যেখানে নাকের অভ্যন্তরীণ শ্লৈষ্মিক ঝিল্লী, মাংসপেশি, এমনকি হাড় পর্যন্ত শুকিয়ে আকারে ছোট হয়ে যায়, যার কারনে অনুনাসিক গহ্বর বৃহদাকার ধারন করে।
কাদের হয়?
সাধারনত মেয়েদের বয়সন্ধিকালের শুরুতে এই রোগের প্রকোপ বেশি দেখা যায় এবং রজোবন্ধের/মেনপজের (মাসিক বন্ধ হয়ে গেলে) পর এই রোগ ভাল হয়ে যায়। তবে পুরুষরাও এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
কারন কি ?
১। বংশগত কারনে হতে পারে। অনেক সময় দেখা যায় একই পরিবারে কয়েকজন একসাথে আক্রান্ত হয়।২। হরমোনের কারনে হতে পারে। ৩। ভিটামিন এ, ডি ও আয়রনের অভাব হলে৪। বিভিন্ন জীবাণু যেমন Klabsiella Ozaenae ও অন্যান্য ব্যাকটেরিয়ার কারনে এই রোগ হতে পারে। ৫। নাকের মাংসবৃদ্ধির কারনে অস্ত্রোপচার হলে
উপসর্গসমুহ কি ?
১। নাক থেকে হলুদাভ বা সবুজাভ গন্ধযুক্ত ময়লা বাহির হয়।২। নাকের ঘ্রাণশক্তি নষ্ট হয়ে যায়।(যদিও নাক দিয়ে যে গন্ধ বের হয় তা অন্যরা বুঝতে পারলেও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এটি বুঝতে পারেননা, এজন্য এটাকে “মারসিফুল এনোসমিয়া” বলে)৩। অনুনাসিক গহ্বর বড় হয়ে গেলেও অতিরিক্ত ময়লা জমার কারনে নাক বন্ধ থাকে৪। নাক দিয়ে রক্ত পড়ে, যা সাধারনত ময়লা সরানোর কারনে হয়ে থাকে।৫। সাইনাসে প্রদাহ হলে, মুখ মন্ডল ও মাথায় ব্যাথা থাকতে পারে।
চিকিৎসা কি?
প্রথমেই বলে রাখি এই রোগ সন্দেহ হলে এন্টাজল বা আফ্রিন জাতীয় নাকের ড্রপ সম্পুর্ণ পরিহার করা উচিত।
ঔষধের মাধ্যমে চিকিৎসা:
১। এলকালি পাউডার ওয়াস ( তিন চামচ আধা লিটার পানিতে মিশিয়ে এটি বারবার নাকের ভেতর দিয়ে ময়লা পরিষ্কার করা হয়)২। ২৫% গ্লুকোজ ইন গ্লিসারিন: ময়লা পরিষ্কার করার পর এটি নাকের ভেতর ড্রপ আকারে দেয়া হয়৩। নরমাল স্যালাইন নাকের ড্রপ ব্যবহার করা যেতে নাকের শুষ্কতা পরিহার করার জন্য৪। প্লেসেন্টাল এক্সট্রাক্ট ইনজেকশন: এটা নাকের ভেতরে টারবিনেটে দেয়া হয়। ৫। মুখে এন্টিবায়োটিক দেয়া হয়। নাকের ভেতর ও এন্টিবায়োটিক ড্রপ দেয়া যেতে পারে (আমাদের দেশে যদিও পাওয়া যায়না)
অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে চিকিৎসা:
১। নাকের ছিদ্র প্রায় সম্পূর্ণ বন্ধ করে ছয় মাস পর খোলা হয় (মডিফাইড ইয়াংস্ অপারেশন)। ২। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অনুনাসিক গহ্বর ছোট করে দেয়া ইত্যাদি।
আরোগ্যসম্ভাবনা: কয়েক বছর থাকার পর মধ্য বয়সের দিকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই রোগ ভাল হয়ে যেতে পারে
ডা_মাহমুদ_উল্লাহ_ফারুকী এমবিবিএস(ঢাকা মেডিকেল কলেজ), বিসিএস(স্বাস্থ্য), এমএস(ইএনটি), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ ও হেড-নেক সার্জন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। কনসালট্যান্ট(ইএনটি), পার্কভিউ হাসপাতাল, পাঁচলাইশ, চট্টগ্রাম।
ফোন: ০১৯৭৬-০২২১১১, ০১৯৭৬-০২২৩৩৩
Discussion about this post