ডা. মো. বখতিয়ার
পায়ের বুড়ো আঙ্গুলের ব্যথা বা গেঁটে বাতকে ইংরেজিতে বলা হয় ‘গাউট’-এর ব্যথা। হাড়ের বিভিন্ন সংযোগস্থলেও এই ব্যথাটি হতে পারে। তবে সবচেয়ে বেশি মাত্রায় ব্যথাটি হতে পারে পায়ের বুড়ো আঙ্গুলে। সাধারণত পুরুষদের চেয়ে মহিলারা এই রোগে বেশি আক্রান্ত হয় এবং যেসব মহিলারা উঁচু হিল জুতা পরেন তারা আবার এ সমস্যায় বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন। মূলত ইউরিক এসিডের কারণেই এই ব্যথা হতে পারে। এই এসিডের মাত্রা শরীরে বেড়ে গেলে হাড়ের সংযোগস্থলে তার লবণ জমা হতে থাকে। সেটি এই ব্যথার কারণ। এছাড়া অন্যান্য কারণও দায়ী। সাধারণত ৯৫% মহিলাদের ক্ষেত্রে পায়ের বুড়ো আঙ্গুলের উপর প্রথমে একটি ফুসকুড়ি দেখা যায়। ধীরে এ ফুসকুড়ি ইনফেকশনে রূপ নেয়, ব্যথা বেড়ে যায় এমনকি এ সময় জুতা পায়ে দিয়ে হাঁটতে সমস্যা হয়।
এ অবস্থায় দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে। যথাসময়ে চিকিৎসা না নিলে ব্যথা বেড়ে যায়, হঠাৎ স্ফীত হয় এবং এটি বুড়ো আঙ্গুলেই থাকে না তা ছড়িয়ে পরে এবং অনেক সময় এই ব্যথা বা ইনফেকশন রোগের উপসর্গও নির্দেশ করে।
চিকিৎসা ও প্রতিরোধ বুড়ো আঙ্গুলে ব্যতা হলে দ্রুত এর চিকিৎসা করাতে হবে। চিকিৎসা নিতে বিলম্ব কররে নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে। ইউরিক এসিডের কারণে পাকস্থলীতে প্রদাহ এবং ঘা হতে পারে; ক্রমশ হাড়ের সংযোগস্থলগুলো বেঁকে যেতে পারে; আবার কিডনিতে পাথর হতে পারে। তাই এই রোগটি অন্যরোগের উপসর্গ মনে করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এই রোগ নিয়ন্ত্রণে প্রতিরোধই প্রথম চিকিৎসা যা আপনি সহজেই করতে পারেন। জুতার ব্যবহারে সাবধান হতে হবে, উঁচু হিলের জুতা ব্যবহার করা যাবে না, শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে, বেশি ভারী কিছু বহন করা যাবে না, সকালে এবং সন্ধ্যায় পায়ের ম্যাসেজ করতে হবে ও সর্বদা পা পরিষ্কার রাখতে হবে, থেরাপিউটিক ব্যয়াম করতে হবে এবং খালি পায়ে হাঁটা সহায়ক হতে পারে।
বুড়ো আঙ্গুলে ব্যথা এবং এটি যদি ইউরিক এসিডের জন্য হয় তখন ডাক্তার চিকিৎসার পদ্ধতি নির্ধারণ করবেন এবং রোগীকে তার করণীয় বলে দিবেন। এই রোগের জন্য অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত মাংস, পালং শাক, ফুলকপি, ইলিশ মাছ, চিংড়ি, মদ এসব খাবার পরিহার করতে হবে।
লেখক: জনস্বাস্থ বিষয়ক লেখক ও গবেষক এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক, খাজা বদরুদজোদা মডার্ণ হাসপাতাল, সফিপুর, কালিয়াকৈর, গাজীপুর।
Discussion about this post