মো: বিল্লাল হোসেন
মানসিক অবসাদ বর্তমান সময়ের একটি মারাত্মক সমস্যা। পৃথিবীর একটি বড় অংশের মানুষই নানা ধরনের মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। তবে বেশিরভাগ মানুষ নিজেরা বুঝতেই পারেন না যে তারা আসলেই মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। ফলে তারা নানা ধরনের জটিলতার মুখোমুখি হন, এমনকি অনেকেই আত্মহত্যা করে থাকেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, মানসিক অবসাদগ্রস্ত হলে একজন ব্যক্তির মধ্যে নানা ধরনের লক্ষণ প্রকাশ পায়। জেনে নিন সেগুলো কী কী।
মাথা ব্যথা
আপনার যদি নিয়মিত বিরতিতে মাথা ব্যাথা হয়, তাহলে বুঝতে হবে আপনার মানসিক অবস্থা স্থিতিশীল না। বলা চলে মাথা ব্যথা অবসাদগ্রস্ততার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপসর্গ।
ঘাড় এবং কাঁধে ব্যথা
প্রায় সবসময়ই যদি আপনার ঘাঁড় এবং কাঁধে ব্যাথা অনুভূত হয়, তাহলে বুঝতে হবে আপনি দুশ্চিন্তাগ্রস্ত।
ক্ষুদামন্দা
আপনার যদি খাবারে অরুচি থাকে এবং ক্ষুদা একদম কমে যায়, তাহলে বুঝতে হবে আপনি মানসিক সমস্যার মধ্যে রয়েছেন।
হজমে সমস্যা
খাবার হজমে সমস্যা হলে সেটিও অনেক সময় মানসিক অবসাদগ্রস্ততার উপসর্গ হিসেবে প্রকাশ পায়।
গলায় থলির মত কিছু জমে আছে বলে মনে হওয়া
অনেকে প্রায়শই বলেন আমার গলার এখানে কী যেন থলির মতো জমে আছে। কিন্তু বুঝতে পারেন না কি জমে আছে। এটি আসলে দুশ্চিন্তার জন্য হয়ে থাকে অনেকসময়।
বুক ভারি হয়ে থাকা
মনে হয় যেন বুকের মধ্যে বিশাল পাথর জমে আছে। আসলে এটি মানসিক অবসাদের একটি লক্ষণমাত্র।
কীভাবে অবসাদ দূর করবেন?
- প্রতিদিন সুষম খাবার খান যাতে করে সঠিক পরিমাণে পুষ্টি নিশ্চিত হয়। খেয়াল রাখতে হবে যেন খাবারে বৈচিত্র্য থাকে এবং খাবারগুলো ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ হয়।
- রিফাইন্ড সুগার বা পরিশোধিত চিনি খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিন।
- আদর্শ ওজন বজায় রাখার চেষ্টা করুন ও নিয়মিত শরীরচর্চা (কার্ডিওভাস্কুলার, স্ট্রেংথ ট্রেইনিং ও স্ট্রেচিং) করুন।
- প্রতিদিন সঠিক সময়ে নিয়মিত ও পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাবেন।
- কাজের ফাঁকে বিরতি নিতে হবে মনকে প্রফুল্ল রাখার জন্য।
- নিজেকে ভালোবাসুন ও নিজের জন্য সময় বরাদ্দ রাখুন।
- বিনোদনমূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করুন।
- অতিরিক্ত ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল পান করা থেকে বিরত থাকুন।
- নিজের সাফল্যে নিজেকে পুরস্কৃত করুন।
- প্রতিদিন প্রকৃতির সাথে সময় কাটানোর অভ্যাস করতে পারেন।
- মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করুন। অন্যকে সহায়তা করার মানসিকতা থাকাও জরুরি।
- নেতিবাচক চিন্তাভাবনা দূর করার চেষ্টা করুন।
- নিজের সীমাবদ্ধতাগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো দূর করার চেষ্টা করুন।
- ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।
- নিজের প্রতি আস্থাশীল হওয়া জরুরি।
লেখক: শিক্ষার্থী, ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
Discussion about this post