হার্টবিট ডেস্ক
স্বপ্নের পদ্মা সেতু ছুঁয়ে দেখার আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি। আর এই সেতু চালু হলে স্বাস্থ্যখাতে নতুন দিগন্তের দ্বার উন্মোচিত হবে বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, রোগীরা এখন বিনা বাধায় পদ্মা পার হয়ে রাজধানীতে চিকিৎসা সেবা নিয়ে জীবন রক্ষা করতে পারবে। নদী পার হতে যাওয়া নৌযানের যাত্রীরাও রক্ষা পাবে সর্বনাশা পদ্মা থেকে। এই পদ্মা নদীতে আর কারো সলিল সমাধি হবে না।
শনিবার (২৫ জুন) পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে এক শুভেচ্ছা বাণীতে উপাচার্য এসব কথা বলেন।
শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, দক্ষিণ বঙ্গের গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানির সন্তান হিসেব এমন অনেক নির্মম ঘটনার সাক্ষী। বোধসম্পন্ন মানুষের কাছে এসব ঘটনা অনেক কষ্টের। কত শত রোগী কাওড়াকান্দি, কাঁঠালবাড়ি ঘাটে বিনা চিকিৎসায় অ্যাম্বুলেন্সে মারা গেছে তার হিসেব কারো কাছে নেই। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার ফলে এসব ঘটনার থেকে জাতি মুক্তি পাবে। এই পদ্মা সেতু চালু হওয়ার ফলে স্বাস্থ্যখাতে নতুন দিগন্তের দ্বার উন্মোচিত হলো।
তিনি বলেন, একজন স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে আমি এ স্বপ্ন জয়ের পদ্মা সেতুকে অর্থনৈতিক বড় প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেশের স্বাস্থ্যখাতের জন্য আরেকটি মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করতে চাই। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সরাসরি যোগাযোগ সৃষ্টি হবে। ফলে সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে পদ্মা সেতু স্বাস্থ্যখাতেও অবদান রাখবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়াও আগে যেখানে মুমূর্ষু রোগীকে পদ্মা নদী পাড়ের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হতো। অনেক রোগী কাওড়াকান্দি, কাঁঠালবাড়ি ও মাঝিকান্দি নৌ-ঘাটে ফেরি পারাপার না হতে পেরেই বিনা চিকিৎসায় মারা যেত।
উপাচার্য বলেন, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে এই পদ্মা সেতু কতখানি অবদান রাখবে সেটি এসব ভুক্তভোগী পরিবার ছাড়াও ২১ জেলার মানুষ ভালো করেই জানেন। মানোন্নয়ন হবে এ ২১ জেলার স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর। এই ২১ জেলায় জন্ম নেওয়া বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা আগে ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও চাইলেই পদ্মা নদী পার হয়ে এলাকার রোগীদের গ্রামে বসে সেবা দিতে পারতেন না। এখন পদ্মা সেতুর কারণে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় সহজে নিজ নিজ গ্রামে যেতে পারবেন। মানুষকে সেবা দিতে পারবেন। প্রয়োজনে গ্রামের রোগীদের ঢাকায় রেফার্ড করতে পারবেন।
বিএসএমএমইউ ভিসি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে শেখ হাসিনা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের মাধ্যমেই আবার প্রমাণ করেছেন বাঙালি জাতিকে দাবিয়ে রাখা যায় না।
শারফুদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, শেখ হাসিনাসহ পুরো জাতিকে অভিনন্দন, এছাড়াও অভিনন্দন সেই সব শ্রমিকদের, যাদের নিরলস পরিশ্রমে এই স্বপ্ন সেতু নির্মিত হয়েছে। পদ্মা সেতু আমাদের আবেগের সেতু, আত্মনির্ভরশীলতার প্রতীক। পদ্মা সেতু আমাদের আত্মবিশ্বাসের প্রতীক। আত্মগৌরবের প্রতীক এই পদ্মা সেতু বাঙালীদের সারাবিশ্বে আরেকবার মহিমান্বিত করেছে।
Discussion about this post