ডা. মো. মাজহারুল হক তানিম
ডায়াবেটিস শুধু রক্তে শর্করার পরিমাণই বাড়ায় না—সেই সঙ্গে ক্ষতি করে আমাদের স্নায়ুর, চোখের, ব্রেনের, হার্টের ও কিডনির। ডায়াবেটিস যাদের আছে তাদের চোখের যে সমস্যাগুলো বেশি হতে পারে সেগুলো হলো—
চোখের ছানি
ডায়াবেটিক রোগীদের চোখে ছানি পড়ার হার যাদের ডায়াবেটিস নেই তাদের থেকে অনেক গুণ বেশি। ডায়াবেটিসের কারণে স্বচ্ছ লেন্স অস্বচ্ছ হয়ে যায়। আস্তে আস্তে এই অবস্থা ছানির আকার ধারণ করে এবং রোগী ক্রমাগত দৃষ্টিহীন হয়ে পড়ে।
ডায়াবেটিস রেটিনোপ্যাথি
রেটিনা হলো চোখের সবচেয়ে দৃষ্টি সংবেদনশীল অংশ। ডায়াবেটিসের কারণে রেটিনার রক্তনালির গ্রোথ বেড়ে যায়। এ ছাড়া রক্তক্ষরণ, প্রদাহ ও পানি জমা হয়ে অন্ধত্ব হতে পারে। লেসার চিকিৎসার মাধ্যমে অনেক ক্ষেত্রে এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়।
চোখের পাওয়ার সমস্যা
অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের কারণে ক্ষীণদৃষ্টি বা মায়োপিয়া হতে পারে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে চশমা ব্যবহার করলে অনেকাংশে আরাম পাওয়া যায়।
গ্লুকোমা
ডায়াবেটিক রোগীদের চোখের চাপ বেড়ে গিয়ে গ্লুকোমা হতে পারে। বহুদিন অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের কারণে চোখে নতুন রক্তনালি তৈরি হয়, যা থেকে চোখে প্রদাহ, রক্তপাত এবং পরে চোখের অভ্যন্তরীণ চাপ বেড়ে গ্লুকোমা হতে পারে।
প্রতিরোধের উপায়
♦ ডায়াবেটিসজনিত চোখের রোগ প্রতিরোধে প্রথমেই ডায়াবেটিস ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে
♦ উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে
♦ রক্তে চর্বি বা কোলেস্টেরল বেশি থাকলে তার চিকিৎসা নিতে হবে
♦ ধূমপান পরিহার করতে হবে
♦ নিয়মিত শারীরিক ব্যয়াম এবং খাওয়াদাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে হবে
চিকিৎসা
♦ লেসার চিকিৎসায় ডায়াবেটিস রেটিনোপ্যাথিজনিত অন্ধত্ব থেকে বাঁচা যায়।
♦ কিছু ইনজেকশন আছে যা নতুন রক্তনালির গ্রোথ বন্ধ করে।
♦ ছানির জন্য অপারেশন করাতে হয়।
♦ গ্লুকোমার জন্য চিকিৎসা চক্ষু বিশেষজ্ঞরা দিয়ে থাকেন।
ডায়াবেটিসজনিত চোখের সমস্যা প্রতিরোধে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা, নিয়মিত ডায়াবেটিসের ডাক্তার দেখানো এবং চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
পরামর্শ দিয়েছেন
ডা. মো. মাজহারুল হক তানিম
কনসালট্যান্ট ,ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ,মালিবাগ, ঢাকা।
Discussion about this post