হার্টবিট ডেস্ক
কোমর ব্যাথায় আক্রান্তদের যদি পূর্ণ বিশ্রাম এবং কিছু ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিশন করানো যায়, তাহলে তাদের মধ্যে শতকরা ৯০ ভাগই ভালো হয়ে যান।
রোববার (১২ জুন) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) এ ব্লকের মিলনায়তনে ‘লো ব্যাক পেইন’ শীর্ষক আয়োজিত এক সেমিনারে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সেমিনারে কি-নোট স্পিকার হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোসার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন। তিনি জানান, অধিকাংশ কোমর ব্যাথা নিয়ম-কানুন মানার মাধ্যমে প্রতিকার করা সম্ভব। এছাড়া মেডিকেল ম্যানেজমেন্ট ও ফিজিক্যাল ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমেও অধিকাংশ কোমর ব্যাথার প্রতিকার সম্ভব। ব্যাথা নিরাময়ে স্টেরয়েড প্রয়োগ করা থেকেও বিরত থাকতে হবে।
অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন বলেন, বেশির ভাগ কোমরের ব্যাথা সাধারণ ব্যথা। স্টেরয়েড শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্ষতি করতে পারে। উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও ক্লুরোসকপি ও আলট্রাসাউড গাইডেড ইন্টারভেনশন করা হয়। এর ফলে অপারেশন এড়ানো যায় এবং রোগীরা আর্থিক দিক থেকেও লাভবান হয়।
তিনি বলেন, যখন কোমরের ব্যাথার সঙ্গে পায়ের ব্যাথা থাকে, পায়ের শক্তি কমে যাবে। এছাড়াও যদি প্রসাব-পায়খানা বন্ধ হয়ে যায়, তখন এটিকে বলি আমরা রেড ব্লাক সাইন। এমন হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কোমরের ব্যাথার অধিকাংশই ডিস্ক প্রল্যাপসই হয়ে থাকে। এছাড়াও আঘাত পাওয়া, টিউমার বা বয়স্ক লোকদের কোমরে পরিবর্তনসহ বিভিন্ন কারণে ব্যাথা হতে পার।
এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আরও বলেন, কোমর ব্যাথা নির্ণয়ের জন্য রেডিওলজি বিভাগে এমআরআই, সিটি স্ক্যান করে যদি দেখা যায়, নার্ভে চাপ দিয়ে আছে, স্পাইনাল কর্ডে চাপ দিয়ে আছে সেটি হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নিউরোস্পাইনাল সার্জারি বিভাগে যোগাযোগ করতে হবে। মেরুদণ্ডের যেকোনো ধরনের অপারেশনের জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়েই এর সমাধান করা সম্ভব।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। এসময় তিনি যেকোনো ব্যাথা নিরাময়ে নিজের খেয়ালখুশি মতো ওষুধ খাওয়া যাবে না বলে সতর্ক করেন।
শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যথা নিরাময়ের জন্য এলোমেলোভাবে ওষুধ খাওয়া যাবে না। খেয়াল খুশিমতো ব্যাথার ওষুধ খেলে কিডনিসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গের ক্ষতি হতে পারে। ব্যাথার ওষুধে অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে।
সেমিনারের প্যানেল এক্সপার্ট হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশররফ হোসেন, ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আবু সালেক, নিউরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আবু নাসার রিজভী ও সেন্ট্রাল সাব কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. বেলায়েত হোসেন সিদ্দিক।
নিউরোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ সবুজ সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন।
Discussion about this post