হার্টবিট ডেস্ক
প্রবাসী চিকিৎসা বিজ্ঞানী ডা.মনির হোসেন খানের নতুন বই ‘ক্রিয়েট দ্য ওয়ার্ল্ড উইদাউট ডিজিস’। বইটি আমেরিকা ও কানাডায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
সারা পৃথিবীকে কিভাবে রোগবিহীন করে তোলা যায়, মানবদেহে ওষুধ প্রয়োগ না করে কিভাবে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়া যায় সেই চিন্তা থেকেই ডা.মনির তার দীর্ঘদিনের কর্মজবনের অভিজ্ঞতা ও গবেষণা থেকে লিখেছেন বইটি। আমেরিকার ‘অথর হাউস’ প্রকাশনী থেকে বইটি বের হয়েছে।
বইটিতে মানবদেহের অলৌকিক পদ্ধতি সম্পর্কে লেখা হয়েছে যার দ্বারা ‘রোগবিহীন বিশ্ব’ পাওয়ার আশা করেছেন লেখক। বইটি সাধারণ মৌলিক বৈজ্ঞানিক তথ্যের সংমিশ্রণ এবং গবেষণালব্ধ জ্ঞান দিয়ে লেখক দেখিয়েছেন-কোনো কারণে যদি আমাদের শরীরে এ২এম (আলফা-২ ম্যাক্রোগ্লোবুনিল) এর পরিমাণ কম থাকে, তখন আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ি। এ২এম-কে আমাদের শরীরে স্বাভাবিক পরিমাণ রাখার জন্য আমাদের করণীয় দিকগুলো তিনি বইটিতে তুলে ধরেছেন।
ডা. মুনির হোসেন গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আমার দীর্ঘ ৩১ বছরের বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখেছি,মানবদেহের রক্তে এই এ২এম প্রোটিনের পরিমাণ কম থাকলে আমাদের কোনো না কোনো রোগ দেখা দিতে থাকে। কারণ বেশিরভাগ রোগ শুরু হয় প্রায় ৫০০ ধরনের রাসায়নিক পদার্থের (প্রোটিয়াস) কোনো না কোনো একটি বা একাধিক প্রোটিয়াসের (অতিরিক্ত পরিমাণ) বিষক্রিয়ার কারণে। এ২এম পদ্ধতি এসব অতিরিক্ত প্রোটিয়াস আমাদের অজান্তেই সর্বক্ষণ শরীর থেকে প্রতিনিয়ত বের করে দিয়ে সুস্থ রাখে। আশ্চর্যজনকভাবে দেখা যায়, সৃষ্টিকর্তা এই এ২এম দিয়েছেন প্রাণিজগতের সব প্রাণির মধ্যে একটি জীবনরক্ষাকারী প্রোটিন হিসেবে৷
তিনি আরও বলেন, আমার উদ্ভাবিত পদ্ধতি কিছু সাধারণ এবং সহজলভ্য খাদ্যতালিকা অনুসরণ করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রায় ৪৬৫ জন (৩০–৮২ বছর বয়স্ক) গত ৬ বছর ধরে সম্পূর্ণ সুস্থভাবে জীবনযাপন করছেন৷ আশ্চর্যজনকভাবে এদের কারোরই কোনোরকম শারীরিক সমস্যা যেমন- জ্বর, সর্দি অথবা কাশিও হয়নি৷ এমনকি ৪৬৫ জনের কেউই করোনায় আক্রান্ত হননি। অথচ ৬ বছর আগেও এদের মধ্যে বেশিরভাগেরই কোনো না কোনো শারীরিক অসুস্থতা ছিল৷
আমেরিকার পেনসিলভেনিয়ায় বসবাসরত প্রবাসী চিকিৎসাবিজ্ঞানী ডা. মুনির ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়া এবং চিলড্রেনস হসপিটাল অব ফিলাডেলফিয়ায় ফ্যাকাল্টি পজিশন নিয়ে কর্মরত ছিলেন।
স্যার সলিমুললাহ মেডিকেল কলেজ থেকে ১৯৮৩ সালে এমবিবিএস পাস করে জাপানের কুমামতো ইউনিভারসিটি, স্কুল অব মেডিসিন থেকে ১৯৯৩ সালে পিএইচডি (ইমমিউনোলজি এবং মলিকিউলার প্যাথোলজি ) ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। ১৯৯৪ সালে পোস্ট ডক্টরেট ফেলোশিপ নিয়ে ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়া এবং টেম্পল ইউনিভার্সিটিতে যৌথ প্রজেক্টে কর্মরত ছিলেন।
এ পর্যন্ত তিনি ৪৪টি পিয়ার রিভিউ জার্নালে পাবলিকেশন এবং চারটি বই লিখেছেন। ক্রিয়েট দ্য ওয়ার্ল্ড উইদাউট ডিজিস তার চতুর্থ বই। দুই সন্তানের জনক ডা. মুনির বর্তমানে আমেরিকায় অবসর জীবনযাপন করে বিভিন্ন সেবামূলক কর্মকাণ্ড করছেন।
ইতিমধ্যে আমেরিকা ও কানাডার বিভিন্ন শহরে তার সদ্য লিখিত বইটি ব্যাপক সমাদৃত হয়েছে এবং তার পদ্ধতি গ্রহণ করে অনেকেই দিন দিন উপকৃত হচ্ছেন। বইটির লিংক–
এ২এম পদ্ধতি
দই– ১ কাপ, কুচি করে কাটা কাঁচা রসুনের কোয়া ২টি, কাঁচা আদা- কুচি করে কাটা (১ চামচ), কালোজিরা – ১ চামচ, পুদিনা পাতা – ৬টি কুচি করে কাটা, মধু – আধা চামচ, লবঙ্গের গুঁড়া – আধা চামচ, হলুদের গুঁড়া – আধা চামচ, যেকোনো বেরি জাতীয় ফল ৬টি, আঙ্গুর ৬টি, খেজুর ১টি, ডুমুর ১টি কুচি করে কাটা, ২টি লেবুর রস, ডিম ১টি। এসব খেতে হবে কাঁচা, কোনো অবস্থাতেই তাপ ব্যবহার করা যাবে না। এ ছাড়া ২৪ ঘণ্টায় তিন লিটার পানি খেতে হবে। কমপক্ষে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে এবং ধূমপান ও যেকোনো নেশা জাতীয় পদার্থ বর্জন করতে হবে।
Discussion about this post