হার্টবিট ডেস্ক
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে টিকা দেওয়া শুরু হয় গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে। এরপর এখন পর্যন্ত টিকার দুই ডোজ দেওয়া হয়েছে ১১ কোটি ৭১ লাখ ৬৬ হাজার ১০ জনকে এবং এক ডোজ পেয়েছেন ১২ কোটি ৮৭ লাখ ৮ হাজার ১৩২ জন। এগুলো দেওয়া হয়েছে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা, সিনোভ্যাক, ফাইজার, জনসন অ্যান্ড জনসন, মডার্না এবং চীনের তৈরি সিনোফার্মের টিকা। প্রতিটি টিকাই দুই ডোজ গ্রহণ করতে হয়; অর্থাৎ জনসংখ্যার বিপরীতে দেশের প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ টিকার আওতায় এসেছে। পাশাপাশি বুস্টার ডোজ দেওয়া হয়েছে ১ কোটি ৪১ লাখ ৬৮ হাজার ৯৫২ জনকে।
জনসংখ্যা ও লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে টিকার পরিসংখ্যান
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ‘রিপোর্ট অন বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস ২০২০’-এর হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯১ লাখ। সুতরাং মোট জনসংখ্যার ৬৯ দশমিক ২৮ শতাংশ মানুষ টিকার দুই ডোজ পূর্ণ করেছেন। আর মোট জনসংখ্যার ৭৬ দশমিক ১১ শতাংশ মানুষ প্রথম ডোজের আওতায় এসেছেন। দেশের ৮০ শতাংশ জনসংখ্যাকে টিকার আওতায় আনতে চায় সরকার। সেই হিসাবে ১৩ কোটি ৫২ লাখ ৮ হাজার মানুষকে টিকা দিতে হবে। তাতে ৮৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ মানুষ টিকার আওতায় এসেছে।
কোন টিকা কতটুকু দেওয়া হয়েছে
দেশে এখন পর্যন্ত ছয় ধরনের টিকার দুই ডোজ মিলিয়ে দেওয়া হয়েছে ২৪ কোটি ৫৮ লাখ ৭৪ হাজার ১৪২ ডোজ। আর টিকা এসেছে প্রায় ২৬ কোটি। টিকা গ্রহীতাদের মধ্যে অ্যাস্ট্রাজেনেকার দুই ডোজ নিয়েছেন ১ কোটি ৮৭ লাখ ১৮ হাজার ১১৯ জন। সিনোফার্ম দুই ডোজ দেওয়া হয়েছে ৫ কোটি ৩০ লাখ ৫৪ হাজার ১১ জনকে। ফাইজার দেওয়া হয়েছে ২ কোটি ৪ লাখ ৩৭ হাজার ৩৬৮ জনকে, সিনোভ্যাক দুই ডোজ দেওয়া হয়েছে ২ কোটি ১২ লাখ ৯৩ হাজার ৯৫১ জনকে, জনসন অ্যান্ড জনসন দেওয়া হয়েছে ২ লাখ ২২ হাজার ৮৬৭ জনকে এবং মডার্না দুই ডোজ দেওয়া হয়েছে ৩৪ লাখ ৪৫ হাজার ৭২৫ জনকে। এর মধ্যে জনসন অ্যান্ড জনসনের এক ডোজের টিকা দেওয়া হয়েছে শুধু ভাসমান জনগোষ্ঠীকে। তাছাড়া ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের টিকার দুই ডোজ দেওয়া হয়েছে ১ কোটি ৫৯ লাখ ১২ হাজার ২৫২ জনকে।
বুস্টার ডোজ গ্রহীতা বাড়াতে জুনে বিশেষ ক্যাম্পেইন
টিকার দুই ডোজ গ্রহীতাদের বুস্টার ডোজ দেওয়া হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত ৮০ শতাংশের বেশি মানুষ বুস্টার ডোজের আওতায় আসেনি। তাই জুনে বুস্টার ডোজের ক্যাম্পেইন করার পরিকল্পনা করছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, জুনের প্রথম দিকে ৬-৭ দিনের একটি ক্যাম্পেইন করা হবে বুস্টার ডোজ দেওয়ার জন্য।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, আজকে আমরা অনেকেই মাস্ক পরি না। মনের মধ্যে সাহস আসছে, জোর আসছে। গত একমাসে একজনও করোনায় মারা যায়নি। এটা একটা বিরল অর্জন। পৃথিবীর খুব কম দেশেই আছে এমন। সে কারণেই বাংলাদেশের জিডিপি আজকে ছয় শতাংশ। পৃথিবীর কোনও দেশেরই তা নেই।
তিনি বলেন, করোনায় ভালো আছি বলেই বাংলাদেশের মানুষ বিদেশে যেতে পারছে কোনও বাধা ছাড়াই। কোথাও সার্টিফিকেট দেখাতে হয় না। পৃথিবীর অনেক দেশ যখন টিকার চিন্তা করেনি তখন আমরা টিকা দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছি। বাংলাদেশ প্রায় সাড়ে ২৯ কোটি টিকা পেয়েছে এবং প্রায় ২৬ কোটি টিকা মানুষকে দেওয়া হয়েছে। যার ফলে বাংলাদেশ এখন সুরক্ষিত, জীবন প্রায় স্বাভাবিক।
Discussion about this post