হার্টবিট ডেস্ক
ইউরোপীয় বিভিন্ন দেশসহ যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়াতে মাংকিপক্সে আক্রান্তদের খোঁজা হচ্ছে বলে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ ও সংবাদমাধ্যমের বরাতে জানিয়েছে বিবিসি। এই রোগে সর্বশেষ নতুন আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ফ্রান্স, সুইডেন ও অস্ট্রেলিয়ায়। বুধবার যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন ও পর্তুগাল মাংকিপক্সে আক্রান্ত শনাক্তের ঘোষণা পর এই অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। কানাডাও রোগটিতে আক্রান্ত সন্দেহে ১৩ জনকে পর্যালোচনা করছে।
যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (এনএইচএস) জানায়, যুক্তরাজ্যে প্রথম আক্রান্ত শনাক্ত হয় ৭ মে। ওই রোগী সম্প্রতি নাইজেরিয়া সফর করেছেন। ধারণা হয় সেখানে তিনি ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর ইংল্যান্ডে ফিরেছেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানায়, এখন পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে ৯ আক্রান্ত বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এই সংক্রমণের উৎস সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে কয়েকজন ‘স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত’ হতে পারে।
অস্ট্রেলিয়া শুক্রবার প্রথম সন্দেহভাজন আক্রান্তের কথা জানিয়েছে। এই সন্দেহভাজন ব্যক্তি সম্প্রতি ইউরোপ সফর থেকে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
বৃহস্পতিবার সুইডেন একজন আক্রান্ত শনাক্তের কথা জানিয়েছে। এছাড়া ইতালিতে একজন ও ফ্রান্সে একজন আক্রান্ত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। সুইডিশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা নিশ্চিত নন কীভাবে ওই ব্যক্তি ভাইরাসের সংস্পর্শে এসেছে। কিন্তু স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ওই ব্যক্তি সম্প্রতি ক্যানারি আইল্যান্ডস থেকে ফিরেছেন।
বুধবার পর্তুগালে ৫ জন আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন। স্পেনে এই সংখ্যা ৭।
স্পেনের দৈনিক পত্রিকায় এল পাইস জানায়, ইউরোপে মাংকিপক্সের কোনও অনুমোদিত টিকা নেই। স্পেন কর্তৃপক্ষ সংক্রমণ ঠেকাতে কয়েক হাজার স্মলপক্স টিকা কিনেছে।
উত্তর আমেরিকার মার্কিন অঙ্গরাজ্য ম্যাসাচুসেটস-এর স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে এক ব্যক্তি মাংকিপক্সে আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তি সম্প্রতি কানাডা ভ্রমণ করেছেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ১৩ জন সন্দেহভাজন আক্রান্তকে পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মতে, আক্রান্তকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা ভালো এবং মানুষের জন্য তিনি ঝুঁকি নন।
মাংকিপক্সের ইতিহাস
১৯৫৮ সালে প্রথম এই রোগটির সন্ধান পাওয়া যায়। মাংকিপক্স একটি প্রাণীবাহিত রোগ। এটি অন্য প্রাণীদের থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হয়। পক্সের মতোই এক অসুখে আক্রান্ত হয়েছিল বেশ কিছু বাঁদর। সেখান থেকেই এই রোগটির নামকরণ মাংকিপক্স।
সাধারণত মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকায় মাংকিপক্সে আক্রান্তদের দেখা যায়। অঞ্চলটির বাইরে এই রোগে আক্রান্তদের ওই এলাকায় ভ্রমণের ইতিহাস থাকে।
ভয়াবহতা
এনএইচএস-এর মতে, মাংকিপক্স একটি বিরল ভাইরাল সংক্রমণ। যা সাধারণত মৃদু হয়। বেশিরভাগ আক্রান্ত ব্যক্তি কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ হয়ে যান।
ভাইরাসটি খুব সহজে মানুষের মধ্যে ছড়ায় না এবং ব্যাপক হারে মানুষের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি খুব কম।
উপসর্গ ও চিকিৎসা
স্মলপক্সের মতোই উপসর্গ দেখা যায় মাংকিপক্স আক্রান্তদের মধ্যে। যদিও এই রোগের ভয়াবহতা স্মলপক্সের তুলনায় কম। উপসর্গগুলোর মধ্যে রয়েছে, জ্বর, মাথাব্যথা, পেশির ব্যথা, পিঠে ব্যথা, ক্লান্তি, কাঁপুনি।
মাংকিপক্সে আক্রান্তদের নির্দিষ্ট ওষুধ বা চিকিৎসা পদ্ধতি নেই। পরিসংখ্যান অনুসারে, স্মলপক্সের টিকা ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে মাংকিপক্সের বিরুদ্ধে কাজ করে।
সুত্র: বিবিসি, হিন্দুস্তান টাইমস
Discussion about this post