হার্টবিট ডেস্ক
বেশিরভাগ জীবাণুই অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে শক্তিশালী হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ জীবাণুগুলোর মধ্যে গড়ে ৩১ থেকে ৬৭ শতাংশ জীবাণু মাল্টি ড্রাগ রেজিস্টেন্সি অর্জন করেছে। দেখা যাচ্ছে, বেশিরভাগ জীবাণুর বিরুদ্ধে কার্যক্ষমতা হারাচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক। ইন্টারন্যাশনাল ভ্যাক্সিন ইনাস্টটিউটের এক গবেষণায় এসব বিষয় উঠে এসেছে।
বুধবার (১৮ মে) রাজধানীর বনানীতে হোটেল ওয়েস্টিনে কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি) ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত বাংলাদেশে চলমান অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল রেসিস্ট্যান্সের (এএমআর) পরিস্থিতি ও এএমইউ ট্রেন্ডস শীর্ষক একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালায় আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ভ্যাক্সিন ইনাস্টটিউটের (ক্যাপটুরা) গবেষণা প্রতিবেদনটি তুলে ধরা হয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব অ্যান্টিবায়োটিক সতর্কতার সঙ্গে ব্যবহার করা উচিত সেগুলোর ব্যবহার বাংলাদেশে অনেক বেশি (প্রায় ৭০% থেকে ৮৮%)। অথচ এই ওষুধগুলোর ব্যবহার ৪০% এর মধ্যে সীমিত রাখা উচিত।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা নির্ধারিত অগ্রাধিকার তালিকাভুক্ত ক্ষতিকর রেজিস্ট্যান্ট জীবাণুসমূহের উপস্থিতি দেশের কিছু কিছু নমুনায় পাওয়া গেছে। এসব জীবাণু জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ ও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। জরুরি ভিত্তিতে মনিটরিং জোরদারের মাধ্যমে এগুলো প্রতিরোধ করা খুবই দরকার।
দেশের অনেক মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবে ডাটা ঠিকভাবে সংরক্ষণ করা হয় না এবং এসব ল্যাবের মাননিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার উন্নতি প্রয়োজন।
এসময় বক্তারা বলেন, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি গুরুতর এবং ক্রমবর্ধমাণ হুমকি। এই গবেষণালব্ধ ফলাফল বাংলাদেশ সরকারকে এএমআর সংবরণ কার্যক্রমে তথ্য-প্রমাণভিত্তিক নীতি এবং অনুশীলন নির্ধারণ ও এর প্রয়োগ করতে সাহায্য করবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির এ ধরনের বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্যউপাত্তের বিশ্লেষণধর্মী গবেষণামূলক কাজের প্রশংসা করে বলেন, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স সংবরণে রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ব্যতীত কোনো প্রকার অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রয় ও গ্রহণ বন্ধ করা জরুরি। একই সঙ্গে অ্যান্টিবায়োটিকের যৌক্তিক ব্যবহার সুনিশ্চিতকরণে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও সচেতনতা প্রয়োজন।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, অ্যান্টিবায়োটিকসহ অন্যান্য ওষুধের গুণগত মান নিয়ন্ত্রণ, লাইসেন্সিং ও আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে ঔষধ প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে। এ গবেষণার মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য ব্যবহার করে সার্ভেইল্যান্স কার্যক্রমকে উন্নত করা সম্ভব।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক আহমেদুল কবির, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ (সংক্রামক) শাখার পরিচালক অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফ ও আইডিসিআর,বিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
Discussion about this post