অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী
এই গরমে বাইরে বের হলে ঘামে ভিজে যায় শরীর। গরম এমন, যেন মাথা কাজ করে না। এ অবস্থায় কাজে কি মন বসে? মনোযোগ দিয়ে কাজ হচ্ছে না, ভালোও লাগছে না—অবস্থাটা এমনই এই তুমুল গ্রীষ্মে।
পেশিতে কি ব্যথা বা খিঁচুনি হচ্ছে? ইচ্ছে কমে গেছে খাওয়ায়? এখন মনে হচ্ছে ঝোলে অম্বলে খাই। টক মাছ, ছোট মাছের ঝোল, তাতে আমের টুকরো। ভুনা কিছু মুখে রুচছে না। তৃষ্ণা লাগছে। এমন অবস্থায় তাপে অবসন্ন হওয়ার পর্যায়ে। চিকিৎসাশাস্ত্রে একে বলে হিট একজসসন। এখানেই শেষ হবে গরমের তেজ, তেমনটা না-ও হতে পারে। হতে পারে হিট স্ট্রোক।
হিট স্ট্রোকের লক্ষণ
- দাবদাহে ক্লান্ত অবসন্ন হওয়া।
- মাথায় তীব্র যন্ত্রণা।
- মূর্ছা যাওয়া বা জ্ঞান হারানো।
- দেহের তাপ ১০৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যাওয়া।
অত্যধিক গরমে এমন অবস্থায় পড়লে সাবধানতা অবলম্বন জরুরি।
যা করতে হবে
- পারতপক্ষে ছায়ায় থাকার চেষ্টা করুন। গাছের ছায়া বা ছাতা ব্যবহার করুন।
- বেলা ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত রোদে কাজ না করার বা রোদে না বেরোতে চেষ্টা করুন।
- ব্যায়ামের সময় কমিয়ে দিন। তবে এ সময় ব্যায়াম না করা ভালো।
- প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন এবং তরলজাতীয় খাবার খান। যেমন পানি, ডাবের পানি, খাওয়ার স্যালাইন, মাঠা ইত্যাদি।
- বেশি করে ফল খাবেন। সঙ্গে সহজে হজম হয় তেমন খাবার।
- ঝাল-মসলাযুক্ত ও গুরুপাক খাবার এড়িয়ে চলুন। মাছ বা মুরগির পাতলা ঝোল খান।
- রঙিন পোশাক না পরে সাদা বা অফ হোয়াইট রঙের পোশাক পরুন। তাতে সূর্যের রশ্মি কম শোষিত হবে এবং গরম কম লাগবে।
- ঢিলেঢালা পোশাক পরুন। তাতে স্বস্তি পাবেন।
- রোদে থাকলে মুখে-চোখে পানি ছিটিয়ে দিন। তারপর ঠান্ডায় বসুন।
- দিনে দুই বা তিনবার গোসল করুন।
- ধূমপানসহ সব ধরনের নেশা বাদ দিন।
- যাঁদের রোদে কাজ তাঁরা ছাতা ব্যবহার করুন। এ ছাড়া বারবার পানি পান করুন। অথবা লবণ, চিনির শরবত কিংবা খাওয়ার স্যালাইন পান করুন। মাঝে মাঝে মুখে-চোখে পানি ছিটিয়ে গামছা দিয়ে মুছে নিন।
লেখক: সাবেক অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ
Discussion about this post