ডা. হুমায়ুন কবীর হিমু
রাস্তাঘাটে চলার সময় আপনার চোখের সামনে হঠাৎ করে কেউ খিঁচুনি দিতে দিতে পড়ে যেতে পারেন। খিঁচুনি আক্রান্ত ব্যক্তিকে চারদিক দিয়ে ঘিরে রেখে টোটকা দিতে প্রায়ই দেখা যায়। কেউ কেউ এসে নাকের কাছে দুর্গন্ধযুক্ত জুতা ধরে ভাবেন এখনই ভালো হয়ে যাবেন খিঁচুনি আক্রান্ত লোকটি। এগুলো একেবারে ভুল ধারণা।
খিঁচুনির সময় যা বিবেচনায় রাখবেন
- খিঁচুনি যেমন শুরু হয়, তেমনি থেমেও যায় আপনা থেকে।
- খিঁচুনি বন্ধে চামড়ার জুতা শোঁকালে কোনো উন্নতি না হয়ে উল্টো জুতার ময়লা নাক, মুখ দিয়ে ঢুকতে পারে। তাই জুতা বা অন্য কিছু শোঁকানো যাবে না।
- খিঁচুনির সময় দাঁতে দাঁত লেগে গিয়ে জিহ্বা কেটে যেতে পারে। দাঁত খোলার জন্য মুখে লোহার আংটা বা আঙুল দেওয়া যাবে না। দুটোই ভয়াবহ হতে পারে। লোহার আংটা রোগীর পেটের মধ্যে যেতে পারে। আর দুই পাটি দাঁতের মধ্যে আঙুল পড়লে তা কেটে যেতে পারে।
- খিঁচুনি আক্রান্ত ব্যক্তিকে জোর করে ধরে খিঁচুনি বন্ধ করার চেষ্টা করা যাবে না। নির্দিষ্ট সময় পর এমনিতেই তা বন্ধ হয়ে যাবে।
- খিঁচুনি আক্রান্ত ব্যক্তিকে দেখার সঙ্গে সঙ্গে ধারালো বস্তু, পানি, আগুন, ব্যস্ত রাস্তা থেকে সরিয়ে নিতে হবে। খোলামেলা জায়গায় রেখে আলো-বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে। ঘিরে রাখা যাবে না।
- খিঁচুনি যত সময় হয়, ততক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে। খিঁচুনি থেমে গেলে ব্যক্তিকে যেকোনো পাশে কাত করে দিতে হবে। এতে করে মুখে জমা লালা বের হয়ে যাবে। চিৎ করে রাখলে লালা ফুসফুসে যেতে পারে।
- খিঁচুনি থেমে যাওয়ার পরও ১০ থেকে ৩০ মিনিট পর্যন্ত আক্রান্ত ব্যক্তির স্বাভাবিক হতে সময় লাগে। তাই এ সময় কেউ একজন পাশে থাকতে হবে।
- ৫ মিনিটের বেশি খিঁচুনি হলে বা বারবার হতে থাকলে দেরি না করে হাসপাতালে নিতে হবে।
লেখক: কনসালট্যান্ট নিউরোলজিস্ট, ল্যাবএইড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ঢাকা
Discussion about this post