হার্টবিট ডেস্ক
আজ সোমবার (২৫ এপ্রিল) বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস। প্রতি বছর এই দিনে স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়াতে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালন করা হয়। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে, ‘উদ্ভাবনী কাজে লাগাই, ম্যালেরিয়া রোধে জীবন বাঁচাই’।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যালেরিয়া নির্মূল কর্মসূচির তথ্যমতে, দেশের মোট ম্যালেরিয়া আক্রান্তের ৯৩ শতাংশই তিন পার্বত্য জেলায়।
বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ১৩টি জেলার ৭২টি উপজেলায় ম্যালেরিয়ার প্রকোপ রয়েছে। রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান- এ তিন পার্বত্য জেলায় ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত ও মৃত্যুহার সর্বাধিক। এ তিন জেলাকে উচ্চ ম্যালেরিয়াপ্রবণ অঞ্চল এবং কক্সবাজার মধ্য ম্যালেরিয়াপ্রবণএলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষ্যে (২৪ এপ্রিল) স্বাস্থ্য অধিদফতরের মতবিনিময় সভায় জানানো হয়, ২০০৮ থেকে ২০২১ সালে দেশের ম্যালেরিয়া রোগীর সংখ্যা ও ম্যালেরিয়ায় মৃত্যু হ্রাসের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে ম্যালেরিয়া সম্পূর্ণ নির্মূলের কথা উল্লেখ করে অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০২০ সালের তুলনায় দেশে ২০২১ সালে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। দেশে ২০২১ সালে ম্যালেরিয়া রোগী ছিল সাত হাজার ২৯৪, মৃত্যু হয় ৯ জনের। তার আগের বছরে রোগী ছিল ছয় হাজার ১৩০, মৃত্যু ছিল ৯টি। ম্যালেরিয়া নির্মূলের আওতাধীন ময়মনসিংহ ও সিলেট অঞ্চলের আটটি জেলায় মোট ম্যালেরিয়া রোগীর সংখ্যা ছিল ১০ জন।
২০০১ সালের আজকের এই দিনে প্রথম ম্যালেরিয়া দিবস পালন করা হয় আফ্রিকায়। এরপর ২০০৭ সালে ওয়ার্ল্ড হেলথ অ্যাসেম্বলির ৬০তম অধিবেশনে বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবসের প্রস্তাবনা করা হয়। এরপর থেকে প্রতি বছর ২৫ এপ্রিল দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালন করা হয়।
প্রাচীন গ্রীসের ফিজিসিয়ান হিপোক্রেটিস, যাকে ‘ওষুধের জনক’ বলা হয়। তিনি প্রথম এই রোগের লক্ষণসমূহের বর্ণনা দেন। তাছাড়া বছরের কোন সময় এটা হয় ও কোন জায়গায় রোগীরা বাস করে সেই তথ্যের সঙ্গে একটা সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করেন। ম্যালেরিয়ার প্রথম নথীবদ্ধ চিকিৎসা পদ্ধতির সময়কাল ১৬০০ সাল, যখন পেরুর আদিবাসীর চিনচোনা গাছের তিক্ত ছাল ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করত। ১৬৪৯ সাল নাগাদ ইংল্যান্ডে এটাই ‘জেসুইট পাওডার’ হিসেবে পাওয়া যেত।
১৮৮০ সাল নাগাদ চার্লস ল্যাভেরন লোহিত রক্ত কণিকা থেকে ম্যালেরিয়ার কারণ হিসেবে একটিমাত্র কোষবিশিষ্ট পরজীবী প্রোটোজোয়াকে চিহ্নিত করেন। ফলে শত বছর ধরে চলা দূষিত বায়ু সেবনের ফলে রোগ সৃষ্টির ভুল ধারণার অবসান ঘটে। ১৮৯৭ সালে ভারতে কর্মরত ব্রিটিশ ডাক্তার স্যার রোনাল্ড রস প্রমাণ করেন যে, (অ্যানোফিলিস) মশা এই রোগের বাহক হিসেবে কাজ করে। এ যুগান্তকারী আবিষ্কারের কারণে তাকে ১৯০২ সালে চিকিৎসা বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়।
এটি একটি সংক্রমিত স্ত্রী মশার (আনোফেলিস মশা) কামড়ের সঙ্গে শুরু হয়, যা তার লালার মাধ্যমে প্রোটিস্টার সংবহন তন্ত্রের মধ্যে প্রবেশ করে এবং শেষে যকৃতে পৌছায়, যেখানে তারা পরিপক্ক হয় এবং বংশবৃদ্ধি করে। ম্যালেরিয়ার সাধারণ রোগের লক্ষণসমূহ হলো- প্রথম দিকে মাথাধরা, ক্ষুধামন্দা, বমি বমি ভাব, কোষ্ঠকাঠিন্য, অনিদ্রা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়।
Discussion about this post