হার্টবিট ডেস্ক
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগে নতুন করে সংযোজন করা হয়েছে ১৩ শ্বাস প্রশ্বাসদানের যন্ত্র ভেন্টিলেটর। ফলে মুমূর্ষু রোগীদের শ্বাস প্রশ্বাসদানের সেবা আরও একধাপ এগিয়ে গেল। এতে এখন থেকে ২০ শয্যার আইসিইউতেই সেবা পাবেন মুমূর্ষু রোগীরা। গত সোমবার এসব যন্ত্র স্থাপনের কাজ শেষ করা হয়েছে।
জানা যায়, ২০২০ সালের নভেম্বরে হাসপাতালের আইসিইউ শয্যা ২০ শয্যায় উন্নীত হলেও গত বছরের শেষ দিকে এসে কৃত্রিম শ্বাস প্রশ্বাসদানের যন্ত্র কয়েকটি ভেন্টিলেটর ফাংশানাল ত্রুটি দেখা দেয়। যার কারণে চিকিৎসকরা বিকল্প ভেন্টিলেটর দিয়েই রোগীদের সেবা দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু এ সংখ্যা বাড়তে থাকায় সেবাদানের ক্ষেত্রে হিমশিম খেতে হয়। এরমধ্যে বাধ্য হয়ে ভেন্টিলেটর ছাড়াও সেবা দিতে হয়েছে চিকিৎসকদের।
জানা যায়, চলতি বছরের চমেক হাসপাতালের বর্তমান পরিচালক ভেন্টিলেটের ত্রুটির বিষয়টি এবং নতুন ভেন্টিলেটরের চাহিদা চেয়ে স্বাস্থ্য দপ্তরের হসপিটাল সার্ভিসেস ম্যানেজমেন্ট বিভাগের লাইন ডাইরেক্টর বরাবরে নতুন ভেন্টিলেটর চেয়ে চিঠি প্রেরণ করেন। এরমধ্যে নতুন ১৫টি ভেন্টিলেটর বরাদ্দ দিয়ে গত ৭ এপ্রিল হাসপাতালে তা সরবরাহ করা হয়। যারমধ্যে ১৩টি ভেন্টিলেটর ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) বিভাগের জন্য বরাদ্দ দেয় কর্তৃপক্ষ। বাকি দুটি ভেন্টিলেটর হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগ এবং ইমার্জেন্সি বিভাগের জন্য বরাদ্দ দেয়। বরাদ্দ পাওয়া নতুন ভেন্টিলেটরগুলো গত রবিবার থেকে সংযোজনের কাজ শুরু করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলীরা। যা গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় শেষ করা হয়।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান বলেন, ‘মুমূর্ষু রোগীদের জন্য ভেন্টিলেটর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এতদিন আইসিইউ শয্যা সবগুলোই চালু ছিল, তবে কিছু ভেন্টিলেটরে কাজ করছিল না। কিন্তু এখন সবগুলোই নতুনভাবে সংযোজন করা হয়েছে। ফলে রোগীদের সেবা গ্রহনে আরও উন্নীত হয়েছে। এখন ২০ শয্যার সবগুলোতেই ভেন্টিলেটর সেবা মিলবে।’
নতুন ভেন্টিলেটর স্থাপন প্রসঙ্গে চমেক হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের দায়িত্বে থাকা এনেসথেসিয়া বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. প্রনয় কুমার দত্ত বলেন, ‘সবগুলো ভেন্টিলেটর সংযোজন করা হয়েছে। সোমবার ২৪ ঘণ্টার জন্য ট্রায়ালে (পরীক্ষামূলক) রাখা হবে। তাতে সবকিছু ঠিক থাকলে পরদিন থেকে রোগীদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।’
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ১৯৬০ সালে মাত্র ১২০ শয্যা ও অল্প কিছু রোগী নিয়ে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করে এ হাসপাতাল। যাতে যুক্ত ছিল মাত্র পাঁচ শয্যার আইসিইউ কার্যক্রম। সবশেষ ২০০৫ সালে তা মাত্র ১২ শয্যায় উন্নীত হয় আইসিইউ। যদিও তখনও সাধারণ শয্যার পরিমাণ ছিল ১০১০ টিতে। ২০১৩ সালে সাধারণ শয্যা বেড়ে ১৩১৩ তে উন্নীত হলেও বাড়েনি আইসিইউ শয্যা। দীর্ঘ এ ১৫ বছরে মাত্র ১২ শয্যা দিয়েই মূমুর্ষু রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে বৃহত্তর চট্টগ্রামের একমাত্র টার্শিয়ারি পর্যায়ের বৃহৎ এ হাসপাতাল। তবে নতুন করে আইসিইউ শয্যা বৃদ্ধি এবং ভেন্টিলেটর সংযোজন হওয়ায় মুমূর্ষু ও মৃত্যু পথযাত্রী রোগীদের আরও অধিক সেবা নিশ্চিত করা যাবে বলে অভিমত প্রকাশ সংশ্লিষ্টদের।
Discussion about this post