ডা. জাহেদ পারভেজ
নানা জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়া পুরুষের যৌনাঙ্গসহ বিভিন্ন গ্রন্থি যেমন প্রোস্টেট গ্রন্থি, শুক্রনালি, এপিডিডাইমিসকে আক্রমণ করে তীব্র প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে। এমনই একটি রোগের নাম গনোরিয়া।
গনোরিয়া দেশের স্বল্পশিক্ষিতদের মধ্যে প্রমেহ নামে পরিচিত। আসলে এটি একটি জীবাণুবাহিত রোগ। নিসেরিয়া গনোরি নামক জীবাণুর কারণে এই রোগ হয়। যৌন সংসর্গের কারণে এ রোগ বেশি ছড়ায়।
পুরুষের উপসর্গ
গনোরিয়ায় আক্রান্ত হলে পুরুষের বিভিন্ন গ্রন্থি যেমন প্রোস্টেট গ্রন্থি, শুক্রনালি, এপিডিডাইমিসে তীব্র প্রদাহের সৃষ্টি করে। আক্রান্ত ব্যক্তির পুরুষাঙ্গের সম্মুখভাগে পুঁজজাতীয় পদার্থ লেগে থাকতে দেখা যায় ও হালকা ব্যথা অনুভূত হতে পারে। কিছুদিন পর রোগের উপসর্গ কিছুটা কমে যায়। তবে এর মানে এই নয় যে রোগটি সেরে গেছে। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা দেখা দিতে পারে। আর দীর্ঘমেয়াদি জটিলতায় শুক্রনালি বন্ধ হয়ে যেতে পারে, উপ-শুক্রাশয় (এপিডিডাইমিস) নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ফলে আক্রান্ত ব্যক্তির পিতা হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে যায়।
নারীর উপসর্গ
নারীদের ক্ষেত্রে যোনিপথের গ্রন্থি, বিশেষ করে জরায়ুমুখের গ্রন্থিগুলো এ জীবাণুতে আক্রান্ত হয়। পরে এ জীবাণু ডিম্বনালিকে আক্রমণ করে। একসময় যোনিপথ ও মূত্রপথ—উভয়ই আক্রান্ত হয় এবং পুঁজ বের হতে দেখা যায়। প্রস্রাবে তীব্র ব্যথা, জ্বালাপোড়া শুরু হয়। আবার ডিম্বনালি দিয়ে জীবাণু দেহের গভীরে প্রবেশ করতে পারে।
দীর্ঘদিন আক্রান্ত থাকলে ডিম্বনালি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ফলে সন্তান ধারণক্ষমতা হারাতে পারেন ওই নারী। আবার আক্রান্ত নারী কোনো সন্তান প্রসব করলে ওই সন্তানের চোখ এ জীবাণুতে আক্রান্ত হতে পারে।
প্রতিকার ও চিকিৎসা
● প্রাপ্তবয়স্ক সব নারী-পুরুষের উপযুক্ত যৌন ও হাইজিন শিক্ষার প্রচলন জরুরি।
● রোগের উপসর্গ দেখা দিলে দ্বিধা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ, উপযুক্ত চিকিৎসায় এটি সেরে যায়। চিকিৎসা না নিলে দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা দেখা দেয়।
● আক্রান্ত অবস্থায় যৌন সংসর্গ থেকে বিরত থাকা উচিত, না হলে সঙ্গীও আক্রান্ত হতে পারে।
ডা. জাহেদ পারভেজ, সহকারী অধ্যাপক, চর্ম ও যৌনরোগ বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল
Discussion about this post