হার্টবিট ডেস্ক
বৈশ্বিক ও দক্ষিণ এশিয়ার তুলনায় আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মেডিকেল জার্নাল প্রকাশনায় বাংলাদেশের অবস্থান নিম্নমুখী বলে দাবি করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা আইপিডিআই ফাউন্ডেশন।
মঙ্গলবার রাজধানীর এক হোটেলে আইপিডিআই ফাউন্ডেশন রিসার্চ মেথডোলোজি কোর্সের সার্টিফিকেট–প্রদান অনুষ্ঠানে ‘মেডিকেল জার্নাল: বৈশ্বিক প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের অবস্থান’ শীর্ষক গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ও সেক্রেটারি জেনারেল ডা. মহসীন আহমদ এ দাবি করেন।
মহসীন আহমদ বলেন, কোনো জার্নাল যখন সুনির্দিষ্ট রিভিউ প্রক্রিয়া অতিক্রম করার মাধ্যমে তার গুণগতমান বজায় রাখে তখন তাকে আমরা ইনডেক্সড জার্নাল বলে থাকি। আমাদের দেশে মেডিকেল জার্নালের সর্বমোট পরিমাণের তুলনায় ইনডেক্সড জার্নালের সংখ্যা একেবারেই অপ্রতুল। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের তথ্যানুযায়ী আমাদের দেশে সর্বমোট ১৪৩টি মেডিকেল এবং ১২টি ডেন্টাল জার্নাল রয়েছে। সর্বমোট এই ১৫৫টি জার্নালের মধ্যে ইনডেক্সড জার্নাল আছে মাত্র ৪টি, যা শতকরা হিসেবে ৬.২ শতাংশ। প্রতিবেশী দেশ ভারতে সর্বমোট মেডিকেল জার্নালের সংখ্যা ৫৭০টি। এর মধ্যে ইনডেক্সড মেডিকেল জার্নালের সংখ্যাই ২০৩টি। শতকরা হিসেবে ৩৫.৬১ শতাংশ ।
তিনি আরও বলেন, অন্যদিকে পাকিস্তানে মোট মেডিকেল জার্নালের সংখ্যা আমাদের তুলনায় কম হলেও মেডিকেল জার্নালের সংখ্যা ৯৭টি। এর মধ্যে ইনডেক্সড জার্নালের সংখ্যা ৯টি। শতকরা হিসেবে প্রায় ৯.৩০ শতাংশ। যদিও এক্ষেত্রে শ্রীলংকার চেয়ে আমরা কিছুটা এগিয়ে আছি। মোট ১৬০টি জার্নালের মধ্যে শ্রীলংকায় মাত্র ২টি ইনডেক্সড জার্নাল (১.২৫ শতাংশ) রয়েছে।
আইপিডিআই মনে করে, একটি দেশের বুদ্ধিবৃত্তিক এবং একাডেমিক অবস্থান সেই দেশের প্রকাশিত বৈজ্ঞানিক নিবন্ধের গুণগতমান এবং পরিমাণ দ্বারা নির্ধারিত হয়ে থাকে। বিশ্বায়নের এই যুগে, স্থানীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলোকে চিহ্নিত করা এবং সেই সমস্যাগুলো থেকে উত্তরণের জন্য তথ্য ও জ্ঞানের আদানপ্রদান অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। একমাত্র গবেষণার মাধ্যমেই এ-উদ্দেশ্য পরিপূর্ণভাবে সাধিত হতে পারে। তাই বেশিরভাগ মেডিকেল জার্নালের মূল লক্ষ্য হল গঠনমূলক বৈজ্ঞানিক নিবন্ধ প্রকাশ করা এবং স্বাস্থ্যক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর উপর আলোকপাত করে চিকিৎসা পরিষেবা উন্নত করা।
আয়োজকরা জানান, আইপিডিআই ফাউন্ডেশন দক্ষ গবেষক ও গবেষণাপত্র লেখক তৈরির উদ্দেশ্যে নিয়মিতভাবে রিসার্চ মেথডোলজি কোর্সের আয়োজন করে আসছে।
কোর্সে ফ্যাকাল্টি হিসেবে আছেন অধ্যাপক ডা. রিদওয়ানুর রহমান, অধ্যাপক ডা. মোজাম্মেল হক, অধ্যাপক ডা. আবদুল ওয়াদুদ চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন, অধ্যাপক হাসিনুর রহমান, ডা. মহসীন আহমদ, ডা. এ কে এম মনওয়ারুল ইসলাম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বে করেন— অধ্যাপক ডা. আবদুল ওয়াদুদ চৌধুরী।
প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মুন্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) অধ্যাপক ডা. সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জী, বিশেষ অতিথি ছিলেন— বাংলাদেশ কার্ডিয়াক সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল শাফী মজুমদার ও বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ রুহুল আমিন।
Discussion about this post