হার্টবিট ডেস্ক
সুস্থভাবে জীবন যাপন করতে হলে ফাস্টফুড ও অ্যালকোহল জাতীয় খাবার না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, অসুস্থ হওয়ার আগেই সুস্থতা নিয়ে ভাবতে হবে। নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করতে হবে। খাওয়া-দাওয়ার ক্ষেত্রে ফাস্টফুড ও অ্যালকোহল জাতীয় খাবার না খেয়ে শাক-সবজি বেশি খেতে হবে।
সোমবার (২৮ মার্চ) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে কোলন ক্যান্সার সচেতনতা মাস (মার্চ-২০২২) উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ পরামর্শ দেন।
শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে এক গবেষণায় দেখা গেছে, পায়ুপথ বা অন্ত্রনালীর ক্যান্সারে পুরুষদের মধ্যে প্রতি ২১ জনে ১ জন ও নারীদের মধ্যে প্রতি ২৩ জনে ১ জন এই রোগে ভোগেন। পুরুষদের মধ্যে দ্বিতীয় ও নারীদের তৃতীয় মৃত্যুর কারণ হিসেবে অন্ত্রনালির ক্যান্সার দায়ী।
এসময় তিনি কোলন ক্যান্সার নির্ণয়ের লক্ষ্যে মল পরীক্ষা (ফিট) করে কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব বলেও উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে আরো জানানো হয়, পায়ুপথ বা অন্ত্রনালীর ক্যান্সারের লক্ষণ হলো পাতলা পায়খানা বা কোষ্ঠকাঠিন্য, মলত্যাগের পরে পেট খালি না হওয়া ভাব, রক্তসহ মল বা গাড় লাল বা কালো রঙের মল, মলদ্বার দিয়ে রক্ত পরা, পেট ফাঁপা বা ব্যাথা, কিছু না খাওয়ার পরও পেট ভরা ভরা লাগা, দুর্বলতা ও অবসাদগ্রস্ত ভাব, হঠাৎ করে ওজন কমে যাওয়া, পেটে মাংসপিণ্ড আকৃতির অনুভব, রক্তশূন্যতা ইত্যাদি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ফুসফুসের ক্যান্সারের পরে পায়ুপথ বা অন্ত্রনালীর ক্যান্সার সারা বিশ্বে পুরুষ ও নারীদের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্থানে আছে। অন্ত্রনালীর ক্যান্সারের জন্য বেশ কিছু কারণ দায়ী। এর রিস্ক ফ্যাক্টর বা ঝুঁকিগুলো হলো- বৃদ্ধ বয়স, উচ্চ মাত্রার প্রাণীজ প্রোটিন, চর্বি জাতীয় খাবার গ্রহণ, অল্প আঁশ যুক্ত খাবার গ্রহণ, মদ্যপান, পূর্বে স্তন, ডিম্বাশয় বা জরায়ুর ক্যান্সারের ইতিহাস থাকলে, বংশগত কারো পায়ুপথ বা অন্ত্রনালীর ক্যান্সার থাকলে, আলসারেটিভ কোলাইটিস, ক্রন্স ডিজিজ বা আই বি ডি (অন্ত্রনালীর ঘা জাতীয় সমস্যা), স্থুলতা, ধূমপান, কায়িক পরিশ্রম না করা, কারো যদি খাদ্যান্ত্রে আগে থেকে পলিপ বা ছোট মাংসপিণ্ড থেকে থাকে, তা ক্যান্সারে রূপান্তরিত হতে পারে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কলোরেক্টাল সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. শাহাদত হোসেন সেখ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. জাহিদ হোসেন, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল, ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী আসগর মোড়ল, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল হান্নান, ল্যাবরেটরি মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. দেবতোষ পাল, কলোরেক্টাল সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. আবু তাহেরসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
Discussion about this post