হার্টবিট ডেস্ক
দেশে মানুষের অঙ্গ প্রতিস্থাপন সহজ করতে অঙ্গদান সংক্রান্ত আইন বাস্তবায়ন জরুরি হয়ে পড়েছে। বিদ্যামান আইনটি কার্যকরের মাধ্যমে বিষয়টি সহজ করতে হবে। একইসঙ্গে মরণোত্তর অঙ্গদানের ব্যাপারে ব্যাপক প্রচারণা চালাতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ।
রবিবার (২৮ মার্চ) রাতে রাজধানীর সাতারকুলে ইউনাইটেড ক্লাব হাউজে আয়োজিত ‘মেকানিক্যাল হার্ট ইমপ্ল্যান্টের সাফল্য ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক আব্দুল্লাহ বলেন, ‘এটি (মরণোত্তর অঙ্গদান) নিয়ে যেনে কোনও ধরনের অপরাধ সংঘটিত না হয়, সে জন্য আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবো।’
দেশে কৃত্রিম হার্ট প্রতিস্থাপনে সাড়া দেওয়ায় ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি রোগী ও তার স্বামীকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি৷ বাংলাদেশে যে এ ধরনের সার্জারি সম্ভব, তা ডা. জাহাঙ্গীর কবীরের নেতৃত্বে প্রমাণিত হয়েছে। এটি অত্যন্ত গৌরবের। তারা এমন একটি কাজ করেছেন যে, বিদেশের অনেকেই এখনও বিশ্বাস করতে পারেন না। এটি আমাদের বিরাট সাফল্য।’
ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, ‘ট্রান্সপ্ল্যান্ট নিয়ে আমাদের দেশে কুসংস্কার আছে। একজন মৃত ব্যক্তি তার অঙ্গ দান করলে অন্তত ৫ থেকে ৬ জন মানুষের জীবন রক্ষা করতে পারেন। এটি একটি বিরাট বিষয়। মৃত্যুর পর অঙ্গ দানে মানুষকে উৎসাহিত করতে হবে।’
মেক্যানিক্যাল হার্ট স্থাপন সার্জারির নেতৃত্ব দেওয়া ইউনাইটেড হাসপাতালের কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. জাহাঙ্গীর কবির বলেন, ‘এই সার্জারি আমাদের সক্ষমতার প্রকাশ। প্রথম অবস্থায় আমরা রোগী পেতাম না। সরকারি হাসপাতাল ছাড়া কোথাও হার্টের চিকিৎসার ব্যবস্থা ছিল না। রোগীরা ধুকে ধুকে মারা যেতেন।’
মানুষকে আস্থায় আনা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মন্তব্য করে ডা. জাহাঙ্গীর কবির বলেন, ‘আমাদের তা ছিল না, আস্থার একটা পরিবেশ তৈরিতে কাজ করছি। বাংলাদেশের অনেক হাসপাতালে এখন হার্টের চিকিৎসা শুরু হয়েছে। আমরা সর্বাধুনিক সার্জারি করছি। তিনি (রোগী) এখন সুস্থ আছেন। রোগীর অস্ত্রোপচার এমনভাবে করা হয়েছে, আমি যেন ভবিষ্যতে হার্ট ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা যায়।’
এ সময় মরণোত্তর অঙ্গদানের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘২০১২ এর পর ভারতে অনেক হার্ট ট্রান্সপ্ল্যান্ট হয়েছে। এর কারণ তাদের অর্গান ফাউন্ডেশন রয়েছে। আমাদের এখানে তা গড়ে ওঠেনি। আমাদের দেশে এ ধরনের ব্যবস্থা তৈরিতে সচেতনতা প্রয়োজন। এতে অনেক প্রাণ অকালে ঝরে যাওয়া রোধ হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে মেকানিক্যাল হার্ট স্থাপন করা নারী ও তার পরিবার উপস্থিত ছিলেন। এটি স্থাপনের পরে তিনি সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন করতে পারছেন বলে চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানান।
প্রসঙ্গত, গত ২ মার্চ রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ৪২ বছরের এক নারীর হৃৎপিণ্ডে মেকানিক্যাল হার্ট বা লেফট ভেন্ট্রিকুলার আ সিস্ট ডিভাইস (এলভ্যারড) স্থাপন করা হয়। ওই নারী তীব্র হার্ট ফেইলিরি নামক হৃৎপিণ্ডের নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।
Discussion about this post