হার্টবিট ডেস্ক
দেশে বিভিন্ন জাতের চাল ছাঁটাই করে মিনিকেট ও নাজিরশাইল নামে বিক্রি হয়। গবেশকরা বলছেন, কারখানায় চাল ‘চিকন বা পলিশিং’ করার ফলে জাতভেদে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত পুষ্টিমান কমে যায়। চালকলগুলোতে একটি চালের দানা ১৮ শতাংশ পর্যন্ত ছাঁটাই করা হয়। কিন্তু ৮ শতাংশ বা তার কম ছাঁটাই করা হলে পুষ্টিমানও বজায় থাকে এবং চালে পানির পরিমাণ থাকবে সর্বোচ্চ ১১ শতাংশ।
গত বুধবার (১৬ মার্চ) বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। ‘নিউট্রিশন অ্যান্ড কোয়ালিটি অ্যাসেসমেন্ট অব পলিশড রাইস সোলড ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এ গবেষণা প্রকাশ করেন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য ড. আব্দুল আলিম। এসময় স্বীকৃত ধান ব্যতিত অন্য কোন নামে চাল বাজারজাতকরণ করা যাবে না বলে তিনি জোর দাবি জানান।
গবেষণায় বলা হচ্ছে, চাল ছাঁটাই বর্তমানের তুলনায় অর্ধেকটা কমানো গেলে প্রায় ২৫ লাখ টন চালও সাশ্রয় করা সম্ভব।
গবেষণার তথ্য তুলে ধরে আব্দুল আলীম বলেন, এ গবেষাণায় আমরা চাল পলিশিংয়ের দুটি ক্ষতিকর দিক পেয়েছি। যার একটা, পলিশিংয়ের কারণে ওপরের আবরণ ছেঁটে ফেলা হয়। এর ফলে পুষ্টিমান কমে যাচ্ছে। কারণ চালের বাইরের আবরণে পুষ্টিমান বেশি থাকে। এ গবেষণায় আমরা দেখেছি ১০ শতাংশ ছাঁটাই করলে প্রায় ৬০ ভাগ পর্যন্ত পুষ্টি কমে। যেখানে মিলগুলোতে ৫ শতাংশ থেকে ১৮ শতাংশ পর্যন্ত চাল ছাঁটাই করছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। বিশেষ করে পলিশিং চালে মিনারেল ও জিংক-আয়রনের মাত্রা একেবারেই কমে যায়। যেটা থাকাটা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম। তিনি বলেন, ‘সরকার পুষ্টিসমৃদ্ধ ও নিরাপদ খাদ্য নিয়ে প্রতিনিয়ত গবেষণা কার্যক্রম হাতে নিচ্ছে।’ ভোক্তার অধিকার নিশ্চিত করার জন্য যে জাতের চাল সে নামে ব্র্যান্ডিং করার জন্য তিনি মিল কারখানা সমিতির প্রতি আহ্বান জানান।
এই গবেষণা পুষ্টিসমৃদ্ধ চাল খাওয়ার ব্যাপারে উৎসাহিত করবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জনাব মো. আব্দুল কাইউম সরকার বলেন, ‘ধীরে ধীরে প্রচার প্রচারণার মাধ্যমে সচেতন করে জনগণকে ব্রাউন চাল খেতে উদ্ধুদ্ধ করতে হবে এবং গবেষণার ফলাফল ছড়িয়ে দিতে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ কাজ করবে।’
Discussion about this post