হার্টবিট ডেস্ক
দেশে প্রতি দশজন নারীর মধ্যে একজন নারী জীবনের কোনো না কোনো সময় এন্ডোমিট্রিওসিসে আক্রান্ত হয়েছেন। আর বন্ধ্যাত্বের শিকার নারীদের প্রতি চারজনে একজন এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে, আশঙ্কাজনক খবর হলো, যারা আক্রান্ত হয়, তাদের অধিকাংশই জানেন না তারা এই রোগটিতে আক্রান্ত। ফলে জরুরি সময়ে চিকিৎসা সেবা থেকেও তারা বঞ্চিত হয়ে থাকেন।
মঙ্গলবার (২২ মার্চ) রাজধানীর আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজে বিশ্ব অ্যান্ডোমিট্রিওসিস সচেতনতা সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত এক সেমিনারে এসব তথ্য জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে সোসাইটি অব এন্ডোমিট্রিওসিসের সাংগঠনিক সম্পাদক ও হাসপাতালটির গাইনি ও অবস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. শেহরিন সিদ্দিকা বলেন, একজন মেয়ে জন্ম থেকেই এন্ডোমেট্রিওসিস নিয়ে জন্মাতে পারে। এটি ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেয়ে বন্ধ্যাত্বের দিকে নিয়ে যায়।
এন্ডোমেট্রিওসিস সম্পর্কে ডা. সিদ্দিকা বলেন, নারীর জরায়ুতে পর্দা থাকে সেটি হরমনের সঙ্গে সম্পর্কিত। মেয়েলি হরমোন যখন আসে তখন এই পর্দা ধীরে ধীরে ইমপ্ল্যান্ট করে। এই পর্দা যদি সাধারণ জায়গা জরায়ুতে না হয়ে অস্বাভাবিক জায়গায় যেমন জরায়ুর বাইরে, ওভারি, খাদ্যনালী, পেটে হতে পারে এমনটি বুকের মধ্যেও যেতে পারে।
এ কারণে অনেক সময় ঋতুস্রাবের স্বাভাবিক রাস্তা বন্ধ হয়ে যায় এবং রক্ত উল্টো পথে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ রক্তগুলো অনেক সময় জমাট বাঁধে এবং এক ধরনের সিস্ট তৈরি হয়ে হয়ে নালিগুলো বন্ধ হয়ে যায়। এসময় পেটে প্রচণ্ড ব্যাথা হয়ে থাকে। মাসের বিশেষ সময়ে এই ব্যথা হয়ে থাকে।
রোগটির প্রধান উপসর্গ সম্পর্কে তিনি বলেন, খুব কম বয়সে বা মাসিক শুরু হলে ব্যাথার কারণে মেয়েরা উঠতে পারে না। এমন কি তারা প্রস্রাব পায়খানা পর্যন্ত ঠিক মতো করতে পারে না। এই রোগ জটিল আকার ধারণ করার আগেই দেখা যায় দশ বছর কেটে যায়। তখন চিকিৎসা প্রক্রিয়াও খুব জটিল হয়ে যায়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালের অধ্যক্ষ শিশু বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. ইখলাছুর রহমান বলেন, সঠিক সময়ে শনাক্ত ও চিকিৎসা করা গেলে ৫০ শতাংশ বন্ধ্যাত্ব কমানো সম্ভব। সমাজের প্রতিটি স্তরে এই বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। মাসিক চলাকালীন প্রচণ্ড ব্যথা যদি তিন দিনের বেশি হয়ে থাকে তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে আসতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এই রোগটি মূলত কিশোরী বয়সেই শুরু হয়। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে এবং এক সময় বন্ধ্যাত্বে পরিণত হয়। এজন্য অভিভাবকদের এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে।
এছাড়া এন্ডোমেট্রিওসিস সম্পর্কে সচেতন করতে আউটডোরে ক্লিনিক চালু করেছেন বলেও জানান তিনি।
Discussion about this post