হার্টবিট ডেস্ক
সারা দেশ থেকে নির্ধারিত ব্যাচের (ব্যাচ নং-৩২১১৩১২১) নাপা সিরাপের নমুনা সংগ্রহের নির্দেশ দিয়েছে সরকার। একই সঙ্গে কারও কাছে এই ব্যাচের ওষুধ থাকলে দ্রুত নিকটস্থ কেমিস্ট অফিসকে অবহিত করতে এবং সেটি বিক্রি না করতে নির্দেশ দিয়েছে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
আজ রোববার বেলা ১২টায় ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও পরিচালক আইয়ুব হোসেন গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান।
আইয়ুব হোসেন জানান, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের নাপা (ব্যাচ-৩২১১৩১২১) সিরাপটি কারও কাছে থাকলে দ্রুত নিকটস্থ কেমিস্ট অফিসকে অবহিত করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে সেটি বিক্রি থেকেও বিরত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে শনিবার রাতে একই অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সকল বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়ে কর্মরত সকল কর্মকর্তাকে স্ব স্ব নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় অবস্থিত পাইকারি ও খুচরা ফার্মেসি পরিদর্শন করে উক্ত পদের বর্ণিত ব্যাচের নমুনা পরীক্ষা ও বিশ্লেষণের জন্য ন্যাশনাল কন্ট্রোল ল্যাবরেটরিতে প্রেরণের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
আরও বলা হয়, গত ১২ মার্চ দেশের বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে জানা যায় যে, মেসার্স বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস কর্তৃক উৎপাদিত নাপা সিরাপ (প্যারাসিটামল ১২০ মিগ্রাঃ/ ৫ মিঃলিঃ) ব্যাচ নং-৩২১১৩১২১, উৎপাদন তারিখঃ ১২ / ২০২১, মেয়াদ উত্তীর্ণ তারিখঃ ১১ / ২০২৩ নামীয় ওষধটি সেবন করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামে একই পরিবারের দুটি শিশু মারা গেছে।
এদিকে দেশব্যাপী আলোচিত এ ঘটনায় দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় থেকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মহিউদ্দিনকে প্রধান করে একটি এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে আশুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুপুর সাহাকে প্রধান করে আরেকটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
জানা গেছে, আশুগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের দুই শিশু ইয়াসিন ও মুরসালিন সর্দি-জ্বরে ভুগছিল। বাড়ির পাশের একটি দোকান থেকে গত বৃহস্পতিবার রাতে নাপা সিরাপ এনে তাদের সন্ধ্যার দিকে দুই চামচ করে খাওয়ানো হয়। রাতে অচেতন হয়ে পড়ে সুজন-লিমা দম্পতির দুই সন্তান।
প্রতিবেশীদের সহায়তায় দুই ছেলেকে ভর্তি করানো হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসক ইয়াসিন ও মুরসালিনকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরে বিষয়টি পুলিশ জেলার সিভিল সার্জনকে জানালে তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়কে সন্তানহারা বাবার অভিযোগের কথা জানান।
অভিযোগ খতিয়ে দেখতে শুক্রবার বিকেলে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়। এদিন সন্ধ্যায় পুরো জেলায় হঠাৎ ওই সিরাপ বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি।
ঘটনা তদন্তে কমিটি করে দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
Discussion about this post