হার্টবিট ডেস্ক
বর্তমানে থাইরয়েড একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ রোগে আক্রান্ত হলে ওজন কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে থাকে না। চুল অকালেই ঝরে পড়ে, ত্বক হয়ে ওঠে জৌলুসহীন। তাই অনেকেই খেতে শুরু করেন থাইরয়েডের ওষুধ। কিন্তু তাতেও কোনো কাজ হচ্ছে না। তার কারণ কি জানেন?
প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক থাইরয়েড সমস্যাটা কী? থাইরয়েড গ্রন্থিটি আমাদের গলায় শ্বাসনালির সামনের দিকে অবস্থিত। এই গ্রন্থি থেকে দুই ধরনের হরমোন টি থ্রি ও টি ফোরের নিঃসরিত হয়। আমাদের শরীরের রক্তে একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় এই হরমোন থাকে।
তাই থাইরয়েডের সমস্যা প্রধানত দুই ধরনের হয়। হাইপারথাইরয়েডিজমে রক্তে থাইরয়েড নিঃসৃত হরমোনের পরিমাণ বেড়ে যায়। আর অন্যটি হলো, হাইপোথাইরয়েডিজমে রক্তে থাইরয়েড নিঃসৃত হরমোনের পরিমাণ কমে যায়।
থাইরয়েড গ্রন্থির আল্ট্রাসাউন্ড, অ্যান্টি টিপিও অ্যান্টিবডি, থাইরয়েড স্টিমুলেটিং, ইমিউনোগ্লোবিউলিন ইত্যাদি পরীক্ষার মাধ্যমে এই রোগ নির্ণয় করা হয়। পরীক্ষায় থাইরয়েড ধরা পড়লেই চিকিত্সকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খাওয়া শুরু করেন অনেকেই।
কিন্তু অনেকেই সঠিক নিয়মে ওষুধ না খাওয়ায় এর কার্যকারিতা পান না। এ বিষয়ে চিকিৎসকরা বলেন, সকালে খালি পেটে থাইরয়েডের ওষুধ খেলে সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যায়। খাওয়ার পর বা খাবারের সঙ্গে এই ওষুধ খেলে শরীরে সঠিকভাবে তা শোষিত হয় না। ফলে থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে না।
হাইপোথাইরয়েডিজমের ক্ষেত্রে যদি একজন ব্যক্তি সকালে খালি পেটে থাইরক্সিনের সম্পূর্ণ ডোজ গ্রহণ করেন, তা হলে রোগীর শরীরে অস্বস্তি হতে পারে। এ ক্ষেত্রে দুটি ডোজে ভাগ করে ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। প্রথম ডোজটি সকালে খালি পেটে এবং দ্বিতীয় ডোজটি রাতে ঘুমানোর আগে খেলে সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
এই ওষুধ খাওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যে কিছু না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। ওষুধ খাওয়ার পর কী খাবেন, তাতে রয়েছে কিছু বিধিনিষেধও। থাইরয়েডের ওষুধ খাওয়ার তিন ঘণ্টার মধ্যে উচ্চমাত্রায় ক্যালসিয়াম রয়েছে এমন কোনো খাবার খাবেন না।
এই ওষুধ খাওয়ার সময় অন্য কোনো সাপ্লিমেন্ট যেমন: আয়রন, ক্যালসিয়াম বা ভিটামিনের ওষুধ ভুলেও খাওয়া যাবে না। শরীরে হরমোনের মাত্রা স্বাভাবিক হলেও ওষুধ বন্ধ না করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। এতে শরীরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই হরমোনের মাত্রা স্বাভাবিক হলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধের মাত্রা কমবেশি করে ওষুধ সেবনের প্রতি জোর দেন গবেষকরা।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
Discussion about this post