উম্মে শায়লা রুমকী
হাত ও পায়ে জ্বালাপোড়া খুবই অস্বস্তিকর একটি অনুভূতি। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায়, এই রোগের নাম পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি। নানারকম শারীরিক সমস্যা, এমনকি মানসিক বিপর্যয় থেকেও এই রোগ দেখা দিতে পারে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে হাত-পায়ের স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হলেই এমনটা ঘটে।
উপসর্গ
- হাত বা পায়ের পাতা জ্বালাপোড়ার অনুভূতি
- কখনো কখনো সুই ফোটার মতো অনুভূতি
- ঝিমঝিম লাগা
- অবশ লাগা
কারণ
- অনিয়ন্ত্রিত ও দীর্ঘদিনের ডায়াবেটিস
- কিডনি ও থাইরয়েড সমস্যা
- শরীরে ভিটামিন বি ১২ ও বি ১-এর অভাব
- মদ্যপান
- রিউমাটয়েড আর্থরাইটিস ইত্যাদি রোগ
- ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
- নারীদের মেনোপোজ
- দুশ্চিন্তা বা মানসিক চাপ
করণীয়
ডায়াবেটিসের রোগীদের রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে, হাত-পায়ের আলাদা যত্ন নিতে হবে।
ব্যায়াম
- পায়ের পাতা কাছাকাছি একটি চেয়ারের কাছাকাছি দাঁড়ান। এবার চেয়ারটি ধরে এক পা পাশের দিকে সরিয়ে নিন। ২-৩ সেকেন্ড ধরে রাখুন। আবার পা আগের জায়গায় নিয়ে আসুন। এবার অন্য পা করুন। এভাবে ১০ বার করুন, দিনে দুই বেলা।
- একটি চেয়ারের পেছনে দাঁড়ান। এবার দুই পায়ের আঙুলে ভর করে দাঁড়ান। ১০ সেকেন্ড ধরে রেখে আবার আগের জায়গায় ফিরে আসুন। এভাবে ১০ বার করুন।
- সকালে ঘুম থেকে উঠে পায়ের নিচে বল বা বোতল নিয়ে রোল করতে পারেন নিয়মিত।
যাঁদের স্নায়ু বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বা অনুভূতি কম, তাঁরা গরম বা ঠান্ডা পানির সেঁক দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। প্যাসিভ মুভমেন্ট বা অন্য কেউ করিয়ে দিতে পারে এমন ব্যায়াম করুন। অনেক সময় ম্যাসাজ বা মাংসপেশির মালিশ ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। তবে তা অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শে করা প্রয়োজন।
যেসব ব্যায়াম নিরাপদ
- কম কষ্টের বা মৃদু মাত্রার কার্ডিয়াক ব্যায়াম
- ভারসাম্যের ব্যায়াম বা ব্যালান্সিং এক্সারসাইজ
- বসে করা যায় এমন শক্তিবৃদ্ধির ব্যায়াম
- রিলাক্সেজন বা ইয়োগার সহজ ধরনের স্ট্রেচিং
এ ব্যায়াম শুরু করার আগে অভিজ্ঞ ট্রেনারের পরামর্শ নিতে হবে।
গবেষণা অনুযায়ী, প্রতিটি মানুষের সপ্তাহে পাঁচ দিন ৩০ মিনিট করে ব্যায়াম করা জরুরি। যাঁদের রক্তে গ্লুকোজ আছে, তাঁদের অবশ্যই সেটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
লেখক: ফিজিওথেরাপি পরামর্শক, ফিজিক্যাল থেরাপি অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার, ঢাকা
Discussion about this post