অনলাইনডেস্ক
ভারতের গায়ক ও সংগীত পরিচালক বাপ্পী লাহিড়ী মুম্বাইয়ের জুহুর ক্রিটিকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। মঙ্গলবার মধ্যরাতে তিনি মারা যান।
চিকিৎসকরা বলছেন, বাপ্পী লাহিড়ীর মৃত্যু হয়েছে অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া ( ওএসএ) রোগে। অনেকেরই প্রশ্ন, অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া রোগ আসলে কি? কোন কোন কারণে এই রোগ হয়? কিভাবে এই রোগ প্রতিরোধ করা যায়?
চিকিৎসরা বলছেন, ঘুমের সময়ের একটি সমস্যা হল অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া। এই রোগে শরীরের উপরের অংশের শ্বাসনালী বরাবর শিথিল হয়ে যায়। ফলে শ্বাস নিতে সমস্যা হয়।
এক্ষেত্রে জিভ, সফট প্যালেটের মতো অংশ ঘুমানোর সময় শিথিল হয়ে পড়লে এই সমস্যা দেখা যায়। এই অবস্থায় শ্বাস নেওয়ার পথ হয়ে যায় ছোট। এই কারণে অনেক সময় শ্বাস নেওয়ায় বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
সাধারণত স্বাভাবিক অবস্থায় ঘুমের মধ্যেও নাক-মুখ হয়ে ফুসফুসে স্বাভাবিক পরিমাণ অক্সিজেন পৌঁছে। তবে ওএসএ-এর সমস্যা থাকলে ঘুমের সময় শ্বাস নিতে সমস্যা হয়।
এক্ষেত্রে শ্বাস নেওয়া সম্পূর্ণ বন্ধ হওয়ার সমস্যাকে অ্যাপিনায় বা অ্যাপেনিক এপিসোড বলে। ওএসএ থাকলে পুরো ঘুমের সময় জুড়ে নানা সময়ে শ্বাস আটকে আটকে যায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যে কোনও মানুষের এই সমস্যা হতে পারে। এমনকী শিশুদেরও এই সমস্যা থাকতে পারে। তবে বয়স্ক পুরুষ মানুষের মধ্যে এই সমস্যা একটু বেশি দেখা যায়। এছাড়া মেনোপজ হওয়ার পর নারীদেরও এই সমস্যা বেশি হতে দেখা যায়।
এই সমস্যার সঙ্গে বেশিরভাগ সময়ই জড়িয়ে থাকে নাক ডাকার সমস্যা। তবে যে কেউ নাক ডাকলেই যে তার এই সমস্যা হবে এটা ঠিক নয়্
চিকিৎসকরা বলছেন, সময় মতো এই রোগের চিকিৎসা না হলে এর থেকে যেসব সমস্যা দেখা দিতে পারে-
১. উচ্চ রক্তচাপ
২. হৃদরোগ
৩. স্ট্রোক
৪. ডায়াবেটিস
৫. আর্টিয়াল ফিব্রিলেশন।
৬. পালমুনারি হাইপারটেনশন
এই রোগের যত লক্ষণ-
এই রোগে আক্রান্ত মানুষের দিনের বেলাতেও ঘুম পায়। এক্ষেত্রে এই রোগের কারণে শরীরে ঠিক মতো অক্সিজেন পৌঁছায় না। ফলে ঘুম ভালো হয় না। তাই সকালের দিকেও এই রোগে আক্রান্তদের ঘুম আসে। এছাড়া ঘুমানোর সময় তাদের যেসব সমস্যা হয়-
১. খুব জোরে নাক ডাকা
২. শ্বাস মাঝে মাঝে আটকে যাওয়া
৩. শ্বাস নেওয়ার ক্ষেত্রে অস্বাভাবিকতা
৪. বারবার ঘুম ভেঙে যাওয়া
এছাড়াও সকালে উঠে মাথা ব্যথা, ভুলে যাওয়া, অবসন্ন বোধ করা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়।
যেসব কারণে এই রোগ হয়-
এই রোগের পিছনে অনেক কারণ থাকতে পারে-
১. ওবেসিটি বা ওজন বেশি থাকা
২. হাইপো থাইরয়েডিজম, পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম ইত্যাদি
৩. অ্যাজমা, সিওপিডি
৪. স্ট্রোক
৫. হৃদরোগ বা কিডনি ফেলিওর।
এসব ছাড়াও পরিবারে কারও এই রোগের ইতিহাস থাকলে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে।
কী করা যেতে পারে?
এক্ষেত্রে প্রথমত রোগ নির্ণয় করতে হয়। রোগ নির্ণয় করা সম্ভব হলে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো থাকতে হয়। এক্ষেত্রে ওজন কমানোর পাশাপাশি অনেক ধরনের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনতে হয়। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
Discussion about this post