হার্টবিট ডেস্ক
ফুটপাতে কাটছে সারাটা জীবন, অর্ধাহারে ,অনাহারে। যখন যা জুটেছে তা খেয়েই দিন পার।
সমাজের অবহেলা যাদের নিত্যসঙ্গী, সেখানে করোনার বিদেশী টিকা যেন আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়ার মতো। নেই কোন নিবন্ধন, নেই আইডি কার্ড , তাই টিকার কোন আশাই ছিলনা তাদের। অথচ সরকার তাদের কথা মনে রেখেছে! টিকা দিয়ে প্রচন্ড উচ্ছ্বসিত তারা।
বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দেওয়া করোনার টিকা গ্রহণ করতে এসে এমন অভিব্যক্তি ছিল নাম না জানা এমন হাজারো মানষের।
দুর্ঘটনায় প্রতিবন্ধী হারুন থাকেন নগরের পুরাতন রেলওয়ে এলাকায়। এদিন তিনিও পেয়েছেন টিকা।
টিকা নেওয়ার পর তিনি বলেন, করোনার টিকা পাবো তা কখনও কল্পনা করতে পারিনি। শেখ হাসিনা আমাদের নিয়ে চিন্তা করেছেন, এটাই আমার আনন্দ।
ভাসমান ছিন্নমূল শতশত মানুষ এসেছিলেন জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শুরু হওয়া করোনার টিকাদান কার্যক্রমে।
টিকা নিতে আসা রিনা বলেন, আমার আইডি কার্ড না্ই। তা্টই টিকা পাওয়ার ্কআশা ছেড়ে দিয়েছিলাম।কোন কাগজপত্রের প্রয়োজন নেই জেনে টিকা নিতে এসেছি। আমরা সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ।
ষাটোর্ধ্ব ষ্টেশন ভিক্ষুক তোরাব মিয়ার চেখে অশ্রু।তার ভাষায়, ভাবতাম আমাদের কোন মা-বাপ নাই।দুমুঠো ভাত জোগাড় হয়না, টিকাতো চিন্তার বাহিরে। কিছুদিন আগে জ্বর হয়েছিলো।তখন ভয় লাগছিলো কোন করোনা হলো নাকি। ভাবতাম যদি টিকা পেতাম। আ জ টিকা দিতে পেরেছি। ভীষণ ভালো লাগছে।
এদিকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নগরের ৫টি স্থানে ভাসমান মানুষের মাঝে টিকাদান কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রায় ১ লাখ মানুষকে টিকাদান কার্যক্রমের আওতায় আনা হবে।
টিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধন শেষে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান বলেন, চট্টগ্রাম শহরে প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ টিকার আওতায় এসেছে। আমরা চাই প্রত্যেকে টিকার আওতায় আসুক। সে লক্ষ্যেই আমাদের এ টিকাদান কর্মসূচি। জনসন অ্যান্ড জনসনের এক ডোজ টিকা দেওয়া হচ্ছে এ কর্মসূচির মাধ্যমে। পাশাপাশি টিকা না নেওয়াদের টিকা নিতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
ছিন্নমূল মানুষদের টিকাদান কার্যক্রমে জেলা সিভিল সার্জন ডা. ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, যেহেতু তারা ভ্রাম্যমাণ লোকজন তাদের দ্বিতীয়বার খুঁজে পাওয়া কষ্টসাধ্য হবে। তাই তাদের জনসন অ্যান্ড জনসনের এক ডোজ টিকার আওতায় এনে স্বাস্থ্যসুরক্ষা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। আমাদের এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। প্রায় এক লাখ মানুষকে এ টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। যদি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি টিকার প্রয়োজন হয় তাও আমরা সরবরাহ করতে পারবো। এছাড়া বিভিন্ন এলাকায় সচেতনতা তৈরির জন্য আমাদের নিজস্ব টিমসহ রেড ক্রিসেন্ট ও অন্যান্য এনজিও সহায়তা করছে।
Discussion about this post