হার্টবিট ডেস্ক
আজ বিশ্ব শিশু ক্যান্সার দিবস। প্রত্যেক বছর ১৫ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিকভাবে এ দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে। নানা আয়োজনে চট্টগ্রামেও দিবসটি পালনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে চিকিৎসকরা বলছেন, ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা চট্টগ্রামেও দিন দিন বাড়ছে। চট্টগ্রামে আক্রান্ত মোট শিশুদের মধ্যে লিউকেমিয়া বা ব্লাড ক্যান্সার আক্রান্ত অর্ধেকের বেশি। জিনগত এবং পরিবেশগত নানা কারণে ক্যান্সার বাড়ছে। তবে ক্যান্সার বাড়লেও শিশুদের ক্যান্সার চিকিৎসার সুযোগ পর্যাপ্ত নয় চট্টগ্রামে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসাতালে শিশু ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসার জন্য মাত্র দুজন চিকিৎসক রয়েছেন। হাসপাতালের শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের ভেতর একটি ১৪ শয্যার ইউনিট করে শিশুদের রক্তরোগ বা ক্যান্সার বিভাগ চলছে। কিন্তু রোগী অনুযায়ী তা খুবই অপর্যাপ্ত বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। গত বছর চট্টগ্রামের এই হাসপাতালটিতে নতুন করে প্রায় দেড়শ জন নতুন শিশু রোগী ক্যান্সারের চিকিৎসা নিয়েছে। তাদের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত বলে ওয়ার্ড সূত্রে জানা গেছে।
এর আগে ২০২০ সালে এই ইউনিটে নতুন রোগী হিসেবে চিকিৎসা নিয়েছে ১২৪ জন। এর মধ্যে ৭৫ জন ছিল ব্লাড ক্যান্সারের বিভিন্ন ধরনে আক্রান্ত। ব্লাড ক্যান্সারের মধ্যে একুইট লিম্পেসাইটিস লিউকেমিয়া বা এএলএল ধরন সবচেয়ে বেশি ৬১ জন ছিল। ইউনিটের প্রধান অধ্যাপক এ কে এম রেজাউল করিম জানান, এএলএল ধরনটি সবচেয়ে বেশি হয়। গত বছরও ৬০ শতাংশ রোগী নতুন এসেছে ব্লাড ক্যান্সার নিয়ে। ১০ বছরের ভেতর যদি এই ক্যান্সার হয় তাহলে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। এর পর কিডনি, লিভারসহ বিভিন্ন ক্যান্সার পাওয়া যায়। দিন দিন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তবে সে অনুযায়ী চিকিৎসা সুবিধা অপ্রতুল। সরকারি বেসরকারি সহযোগিতায় শিশুদের ক্যান্সার চিকিৎসা চলছে।
চমেক হাসপাতালে ক্যান্সার রোগ নির্ণয়ের জন্য সমাজসেবী ও সান সাইন গ্রামার স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ সাফিয়া গাজী রহমানসহ অনেকের সহযোগিতায় একটি ল্যাব করা হয়েছে। কিন্তু শিশুদের ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য মাত্র একজন অধ্যাপক ও একজন সহকারী রেজিস্ট্রারের পদ রয়েছে। অন্য কোনো পদ এখনো সৃজন হয়নি।
চিকিৎসকেরা জানান, ক্যান্সার একটি দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা পদ্ধতি। এ ছাড়া খরচ অনেক বড় ব্যাপার। আর সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে ক্যান্সার রোগীদের গাদাগাদি করে না রেখে পৃথক শয্যায় রাখতে পারলে ভালো। কিন্তু হাসপাতালে ওই সুযোগ এখনো নেই। তবে চট্টগ্রামে নির্মিয়মান পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার হাসপাতালে শিশুদের জন্য পৃথক ইউনিট থাকবে। সেখানে পর্যাপ্ত জনবল এবং সুযোগ-সুবিধা রাখা হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
Discussion about this post