হার্টবিট ডেস্ক
দেশে প্রতিদিনই বাড়ছে মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যা । বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, প্রতিবছর দেশে দেড় লাখেরও বেশি মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। এদের মধ্যে ২০ হাজার আক্রান্তই শিশু। আর আক্রান্ত এসব শিশুদের মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশই চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হয় বলে জানিয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)।
আজ মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে বিশ্ব শিশু ক্যান্সার দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু হেমাটোলজি ও অনকোলজি বিভাগের আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব তথ্য জানান।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু হেমাটোলজি ও অনকোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. এটিএম আতিকুর রহমান।
এ সময় তিনি বলেন, আমরা দেখি যে ক্যান্সার চিকিৎসায় উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে অনুন্নত দেশগুলোর অনেক অসমতা ও বৈষম্য রয়েছে। উন্নত বিশ্বে আক্রান্ত ৮০ ভাগ রোগী ভালো হন। কিন্তু দরিদ্র দেশগুলোতে এর পরিমাণ ২০ শতাংশ। এই বৈষম্য দূর করতে ৯৩টি দেশের মধ্যে দিবসটি পালিত হয়।
ডা. আতিকুর রহমান বলেন, দেশের শিশু ক্যান্সার চিকিৎসায় সফলতাকে উন্নত বিশ্বের কাছাকাছি নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। আমাদের শিশু হেমাটোলজি ও অনকোলজি বিভাগ শুধু শিশুদের ক্যান্সার চিকিৎসা করে থাকে না, চিকিৎসকদের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থাও করে। আমাদের এখানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসকরা সারাদেশের মেডিকেল কলেজগুলোতে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে, যার ফলে ক্যান্সারে আক্রান্ত একটা শিশুর পরিবার যদি চিকিৎসায় লেগে থাকে, তাহলে বিএসএমএমইউতেই আক্রান্তদের মধ্যে ৬০/৭০ ভাগ ভালো হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, শিশু ক্যান্সার নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতেই দিবসটি পালিত হচ্ছে। এক সময় ভাবা হতো ক্যান্সার হলেই মৃত্যু। কিন্তু চিকিৎসার মাধ্যমে ভুল প্রমাণিত হয়েছে। এখানে দুই হাজার রোগীকে সুস্থ করা হয়েছে।
উপাচার্য বলেন, শিশু ক্যান্সার আক্রান্তদের জন্য গত বছর আমাদের হাসপাতালে শেখ রাসেল গ্যালারি উদ্বোধন করা হয়েছে। আমরা সবাই মিলে যদি কাজ করি, তাহলে এটি প্রতিরোধ সম্ভব। এজন্য শুধু চিকিৎসক নয়, সব শ্রেণি পেশার মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের এখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তৈরি হচ্ছে। এখন থেকে বিভাগীয় পর্যায়েও ক্যান্সার চিকিৎসা দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, করোনা মহামারিতে কোনো রোগীকে দেশের বাইরে যেতে হয়নি। তার মানে এই সময়ে সবাই দেশেই চিকিৎসা সেবা নিয়েছে। প্রমাণিত হয়েছে যে আমরা তাদের সবাইকেই সেবা দিতে সক্ষম। আমাদের দেশেই এখন উন্নত চিকিৎসা চলছে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, শিশু হেমাটোলজি ও অনকোলজি বিভাগের সাবেক প্রধান অধ্যাপক ডা. আনোয়ারুল করিমসহ আরও অনেকে।
Discussion about this post