হার্টবিটডেস্ক
আমাদের জীবনযাত্রার নানা অনিয়মের কারণেই আমরা এখন যে রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছি তা হলো হৃদরোগ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ তথ্যমতে বিশ্বে প্রতি বছর হৃদরোগজনিত অন্তত ১ কোটি ৭৯ লাখ লোক মারা যান। এই হিসেবে বাংলাদেশে প্রায় ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হচ্ছে হৃদরোগে কারণে। হৃদরোগটিকে প্রতিহত করতে দৈনন্দিন জীবনে আনতে পারেন মাত্র একটি পরিবর্তন করে। আর তা হলো আপনার রান্না করার তেলটি পরিবর্তন করে ফেলুন।
আপনার রান্নাঘরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলোর মধ্যে একটি হলো তেল। এটি আপনার স্বাস্থ্যের ওপর যথেষ্ট প্রভাব ফেলতে পারে। কেননা রান্নার তেল প্রায় প্রতিটি খাবারের একটি অবিচ্ছেদ্য উপাদান। কিছু রান্নার তেল হৃৎপিণ্ডের জন্য বিশেষভাবে ভালো এবং আপনার শরীরকে নানাভাবে উপকার করে। তাই রান্নার জন্য বেছে নিন এমন তেল যা আপনার হৃদয়কে একাধিক উপায়ে উপকার করে।
নিম্নে এগুলো উল্লেখ করা হলো-
বাদাম তেল:
বাদাম তেল হৃৎপিণ্ডের জন্য সেরা রান্নার তেলগুলোর মধ্যে একটি হিসেবে বিবেচিত হয়। এই তেলে ভিটামিন ই এবং মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট রয়েছে। এই তেলের উপাদান ভিটামিন ই হার্টের জন্য ভালো। এই তেল খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে পারে। ওমেগা ৬ এবং ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের সঠিক সংমিশ্রণ পেতে রান্নায় বাদাম তেলের ব্যবহার শুরু করতে পারেন।
জলপাই তেল:
জলপাই তেল সবচেয়ে জনপ্রিয় স্বাস্থ্যকর রান্নার তেলগুলোর মধ্যে একটি। এটি পলিফেনল নামক উদ্ভিদভিত্তিক যৌগগুলোকে লোড করতে সাহায্য করে যা হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। অলিভ অয়েলে স্বাস্থ্যকর চর্বিও রয়েছে যা কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এ ছাড়া এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বকের সুরক্ষায় কাজ করে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে।
সূর্যমুখী তেল:
সূর্যমুখী তেল কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। তাই হার্টের সুরক্ষায় রান্নার জন্য ভিটামিন ই সমৃদ্ধ সূর্যমুখী তেল ব্যবহার করতে পারেন।
সরিষা তেল:
ঔষধি গুণে সমৃদ্ধ সরিষার তেল শুধু হৃৎপিণ্ডেরই উপকার করে না বরং ত্বক, জয়েন্ট এবং শরীরের অন্যান্য অংশেরও উপকার করে। এই তেলে প্রচুর পরিমাণে মনোস্যাচুরেটেড এবং পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ওমেগা ৩ এবং ওমেগা ৬ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। এটিও বিশ্বাস করা হয় যে সরিষার তেল হজম এবং ক্ষুধা উন্নত করে।
তিসির তেল:
নিয়মিত তিসির তেল ব্যবহারে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমে। হজমে সাহায্য করার পাশাপাশি এটি শরীরের দূষিত পদার্থ বের করে দেয়। অতিরিক্ত মেদ কমাতে, কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পেতে, বা হার্টের সুরক্ষায় এই তেল খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।
স্যাফ্লোয়ার তেল:
স্যাফ্লোয়ার তেল শরীরে কোলেস্টেরলের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। এই তেলে থাকা উপাদানগুলো শরীরের ধমনীকে শক্ত হওয়া থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করতে পারে।
মনে রাখবেন আপনি রান্নার জন্য যে তেল ব্যবহার করেন তা আপনার হার্টের যত্ন নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সুতরাং প্রতিদিনের রান্নার কাজে এইসব তেলগুলোর যেকোনো একটি বেছে নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
Discussion about this post