হার্টবিট ডেস্ক
ক্যানসারে আক্রান্তকেও মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচানো সম্ভব। তবে, তার জন্য রোগটি প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু এমন কিছু ক্যানসার রয়েছে যেগুলো প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা প্রায় অসম্ভব। যেমন-
কিডনির ক্যানসার : কিডনি ক্যানসারের শুরুটা সম্পর্কে রোগীরা নাও জানতে পারেন। যেহেতু কিডনি শরীরের খুব গভীরে অবস্থিত, তাই রোগীরা এ ক্যানসারের প্রাথমিক পর্যায়ে উপসর্গ অনুভব করে না বললেই চলে। বিরল ক্ষেত্রে, কোনো রোগী কিডনি ক্যানসারের লক্ষণ হিসেবে টিউমার অনুভব করতে পারেন। আবার কখনো কখনো রোগী কিডনি ক্যানসারের একটি লক্ষণ হিসেবে পার্শ্ব ব্যথা অনুভব করতে পারেন। প্রায়ই এমন ব্যথা হলে এবং এই ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হলে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। এছাড়াও সারাক্ষণ ক্লান্তি ভাব, আচমকা ওজন অস্বাভাবিক কমে যাওয়া এবং মূত্রের সঙ্গে রক্তপাতও কিডনি ক্যানসারের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
প্যানক্রিয়াটিক ক্যানসার : সমীক্ষায় দেখা গেছে, সারা দেশে ক্যানসার আক্রান্তদের মধ্যে মাত্র ২ শতাংশ প্যানক্রিয়াটিক ক্যানসারে আক্রান্ত হন। কিন্তু ব্রেস্ট ক্যানসারের তুলনায় এতেই বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। প্যানক্রিয়াস বা অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার শনাক্ত করা বেশ কঠিন। কারণ, অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারের ড়্গেত্রেও সাধারণ জন্ডিসের মতোই উপসর্গ দেখা দিতে পারে। প্রাথমিকভাবে তেমন ব্যথা হয় না, তেমন কোনো উপসর্গও প্রকাশ পায় না।
লিভার ক্যানসার : একেবারে শেষের দিকে উপসর্গ বোঝা যায় বলে লিভার বা যকৃতের ক্যানসার শনাক্ত করা কঠিন। লিভারের বেশিরভাগ অংশই পাঁজরের নিচে ঢাকা থাকে। যাদের মদ্যপানের অভ্যাস রয়েছে বা লিভার সিরোসিস রয়েছে, তাদের লিভার ক্যানসারের ঝুঁকি বেশি।
লাং ক্যানসার : বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই লাং বা ফুসফুসের ক্যানসার ছড়িয়ে পড়ার পড়েই ধরা পড়ে। তেমন কোনো বিশেষ উপসর্গও থাকে না। শুধু তাই নয়, চেস্ট এক্সরেতেও ফুসফুসের ক্যানসার ধরা পড়ে না। পিইটি বা সিটি স্ক্যানে একমাত্র ধরা পড়তে পারে।
ওভারিয়ান ক্যানসার : মহিলারা যত রকমের ক্যানসারে আক্রান্ত হন তার মধ্যে মাত্র ৩ শতাংশ ওভারিয়ান ক্যানসার বা জরায়ুর ক্যানসার। কিন্তু মাত্র ২০ শতাংশ ওভারিয়ান ক্যানসার প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা যায়। কারণ, প্রাথমিক পর্যায়ে তেমন কোনো উপসর্গ থাকে না। সাধারণত, তৃতীয় বা চতুর্থ পর্যায়ের পর ওভারিয়ান ক্যানসার ধরা পড়ে।
ব্রেন টিউমার : মস্তিষ্কের টিউমার শনাক্ত করা যায় তখনই যখন তার উপসর্গগুলো প্রকাশ পায়। যেমন- হাত কাঁপা, মাথাব্যথা, কথা জড়িয়ে যাওয়া, ব্যক্তিত্বে সূক্ষ্ম পরিবর্তন। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আক্রান্তরা উপসর্গগুলোকে তেমন একটা গুরুত্ব দেন না। সাধারণত এমআরআই বা মস্তিষ্কের সিটি স্ক্যান ছাড়া ব্রেন ক্যানসার ধরা পড়ে না।
সার্কোমা ক্যানসার : শরীরের বিভিন্ন টিস্যু যেমন পেশি, চর্বি, ত্বকের গভীরের কোষ, হাড় বা তরুণাস্থিতে বাসা বাঁধে সার্কোমা ক্যানসার। প্রাথমিক পর্যায়ে এই ক্যানসারের তেমন কোনো উপসর্গ প্রকাশ পায় না। সাধারণত, শিশুদের মধ্যেই এমন ক্যানসার বেশি দেখা যায়। এই ক্যানসার সাধারণত দ্বিতীয় বা তৃতীয় পর্যায়ের পর বায়োপসির মাধ্যমে শনাক্ত করা যায়। কিন্তু অন্য কোনো পরীক্ষার মাধ্যমে সার্কোমা ক্যানসার শনাক্ত করা যায় না।
Discussion about this post