হার্টবিট ডেস্ক
শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিমে) হাসপাতাল বিশেষায়িত হওয়া সত্ত্বেও প্রতিষ্ঠার ৫১ বছর পর বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) প্রথমবারের মতো চালু হয়েছে ভাস্কুলার সার্জারি, কার্ডিওলজি, ইউরোলজি ও গ্যাস্ট্রোএন্ট্রোলজি বহিঃ বিভাগের কার্যক্রম।
বুধবার এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম ও অধ্যক্ষ ডা. মনিরুজ্জামান।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭০ সালের ২০ নভেম্বর দেশের দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম চিকিৎসাসেবা কেন্দ্র শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কার্যক্রম শুরু হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে সব ধরনের রোগের চিকিৎসার ইনডোর আউটডোর সেবা থাকতে হবে। কিন্তু শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চিকিৎসক ও স্থান সল্পতার কারনে একাধিক রোগের ইনডোর-আউটডোর সেবা কার্যক্রম চালু ছিল না। বিশেষ করে কার্ডিওলজি (হৃদরোগ) চিকিৎসার বহিঃবিভাগ চালু না থাকায় গরিব ও সাধারণ রোগীরা প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন।
এ অবস্থায় ২০১৫ জানুয়ারিতে এক সভায় স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়ন কমিটির সভাপতি আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ জরুরি ভিত্তিতে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে হৃদরোগ বহিঃবিভাগ চালুর নির্দেশ দেন। তবে, এ বিষয়ে বিগত দিনে হাসপাতালের পরিচালকের মধ্যে কেউই কোনো ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
গেল বছরের ১৩ এপ্রিল ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম পরিচালকের দায়িত্ব নেওয়ার পর ফাইলবন্দী থাকা স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়ন কমিটির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেন। তিনি মন্ত্রী পদমর্যাদার আবুল হাসনাত আবদুল্লাহর সহায়তায় ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব (স্বাস্থ্যসেবা) লোকমান হোসেন মিয়ার ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফলে হাসপাতালে হৃদরোগ (কার্ডিওলজি) বহিঃবিভাগের পাশাপাশি গ্যাস্ট্রোএন্ট্রোরোলজি, ইউরোলজি ও ভাস্কুলার সার্জারি বহিঃ বিভাগের চিকিৎসা কার্যক্রম চালু করেন।
প্রশাসনিক শাখা সূত্রে জানা গেছে, এখন থেকে প্রতিদিন ডা. মো. শাহ আলম ইউরোলজি বহিঃবিভাগে রোগীদের সেবা দেবেন। তবে, স্থান স্বল্পতার কারণে প্রতি সপ্তাহের রোববার, মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার হৃদরোগ বহিঃবিভাগে রোগী দেখবেন সহকারী রেজিস্টার ডা. মুসফিকুর রহমান এবং ডা. একে চৌধুরী রোগী দেখবেন ভাস্কুলার সার্জারি বহিঃবিভাগে। এছাড়া প্রতি শনিবার, সোমবার ও বুধবার গ্যাস্ট্রোএন্ট্রোরোলজি ইনডোর থেকে পাঠানো একজন চিকিৎসক এই রোগের রোগীদের চিকিৎসা দেবেন।
উল্লেখ্য, পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম যোগদানের স্বল্প সময়ের মধ্যেই এন্ড্রোক্রাইনোলজি (ডায়াবেটিস), বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ও নিউরোসার্জারি ইনডোর চিকিৎসা কার্যক্রম চালু করার সব প্রক্রিয়া শেষ করেছেন।
এছাড়া তিনি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা সিটিস্ক্যান, চোখের লেসিক ও এনজিওগ্রাম মেশিন চালু করা এবং নতুন এমআরআই মেশিন সরবারের প্রক্রিয়া হাতে নিয়েছেন। এর পাশাপাশি সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোর থেকে আরও ৪টি অত্যাধুনিক আল্ট্রাসোনগ্রাম মেশিন সরবরাহ করেছেন। পাশাপাশি তার সময়েই হাসপাতালে প্রথমবারের মতো ভারত সরকার দেওয়া আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্স পেয়েছে।
পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার মূল উদ্দেশ্য হলো, ওই হাসপাতালে সব ধরনের সেবা নিশ্চিত করা। অন্য হাসপাতালে রেফার্ড করার মতো শব্দটি বিলুপ্ত ঘটানো।
এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে বিভিন্ন রোগের আন্ত ও বহিঃবিভাগ চালু করতে পেরে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেককে বরিশালবাসীর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান।
Discussion about this post