নাঈমা ইসলাম অন্তরা
‘হ্যালুসিনেশন’ শব্দটির সঙ্গে আমরা সবাই কমবেশি পরিচিত। এটি এমন এক মানসিক অবস্থা, যখন কেউ অজান্তে ভ্রান্তির মধ্যে বা অলীক কোনো বস্তু বা বিষয়ের ভেতর বসবাস করে। যেমন ধরুন, কেউ একজন হয়তো দাবি করল, অদৃশ্য কেউ তার কানে কানে কথা বলে যায়, তার মানে ওই ব্যক্তির শ্রবণেন্দ্রিয়ের হ্যালুসিনেশন ঘটে। হ্যালুসিনেশন দেহের প্রতিটি ইন্দ্রিয়তে ঘটতে পারে। কেউ হয়তো দেখে তার আশপাশে একটি কুকুর সব
সময় হাঁটাহাঁটি করছে; আসলে কোনো কুকুর তার আশপাশে থাকে না, এটা ভিজ্যুয়াল হ্যালুসিনেশন।
আবার এমনও হতে পারে, আক্রান্ত মানুষটি এক বা একের অধিক মানুষের সঙ্গে কথা বলতে পারে। আবার এটাও হতে পারে, একজন একখানে বসে দূরের কারও সঙ্গে কথা বলছে। হ্যালুসিনেশনের এমন অনেক উদাহরণ পাওয়া যাবে খুঁজলে। কেউ কেউ এটাকে অলৌকিক শক্তি ভাবলেও এটা আসলে মানসিক রোগের উপসর্গ।
হ্যালুসিনেশনের কারণ
হ্যালুসিনেশন আসলে কোনো রোগ নয়, এটি অন্য রোগের উপসর্গ। এটি সাধারণত মানসিক রোগের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। তবে কিছু ক্ষেত্রে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থেকেও হ্যালুসিনেশন হতে পারে। তাই কেবল হ্যালুসিনেশন দিয়ে কোনো নির্দিষ্ট রোগ নির্ণয় করা সম্ভব নয়।
যেসব কারণে হ্যালুসিনেশন হতে পারে
- সিজোফ্রেনিয়া
- সিভিয়ার মুড ডিসঅর্ডার
- ডিল্যুশনাল ডিসঅর্ডার
- মস্তিষ্কের সমস্যা
- শরীরে লবণের তারতম্য
- প্রচণ্ড জ্বর (বিশেষ করে
শিশুদের হ্যালুসিনেশনের ক্ষেত্রে - মৃগীরোগ, বিষণ্নতা, হিস্টিরিয়া বা ব্রেন টিউমার
- স্নায়ুতন্ত্রের বিভিন্ন রোগ
- বিভিন্ন ইন্দ্রিয়ের সমস্যা
- লিভার বা কিডনি বা মস্তিষ্কের ক্যানসার
- মাত্রাতিরিক্ত বিভিন্ন ধরনের নেশাদ্রব্য সেবন
মুক্তির উপায়
যে কারণেই হ্যালুসিনেশন হোক না কেন, অবশ্যই মনোরোগবিজ্ঞানী বা মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
লেখক: সাইকো-সোশ্যাল কাউন্সিলর, ঢাকা
Discussion about this post