হার্টবিটডেস্ক
দেশে করোনা রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বেড়েই চলেছে। গতবারের তুলনায় এবার করোনায় আক্রান্তদের বেশিরভাগই সেরে উঠছেন ঘরোয়া আইসোলেশনের মাধ্যমে।
তবে উদ্বেগের বিষয় হলো করোনা মুক্তির পরও অনেকেই জ্বর ও মাথাব্যথায় ভুগছেন, আবার কারও কারও গলার স্বর পরিবর্তন হয়ে গেছে। এমনকি করোনামুক্তির পরও কাশির সমস্যা কমছে না। এমনটি হওয়ার কারণ কী?
বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে আক্রান্তদের মধ্যে হালকা জ্বর, সর্দি কিংবা গা ব্যথা প্রকাশ পাচ্ছে। সবাই সাধারণ জ্বর-ঠান্ডা ভেবে করোনা পরীক্ষা করেননি। আবার অনেকের শরীরে কোনো উপসর্গই প্রকাশ পায়নি, তবও তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
এমন রোগীদের ক্ষেত্রে এখন নানা ধরনের অসুস্থতা দেখা দিচ্ছে। চিকিৎসকরা যাকে বলছেন লং কোভিড কিংবা পোস্ট কোভিড। দেশ প্রায় সবদেশেই এখন একই অবস্থা। অর্থ্যাৎ করোনামুক্তির পরও বেশিরভাগ রোগীরা সেরে ওঠার পর নানা ধরনের শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন।
এর পেছনে কারণ কী? এক্ষেত্রে মূলত দু’টি কারণ দেখতে পাচ্ছেন চিকিৎসকরা। প্রথমত, গতবারের তুলনায় বেশি সংখ্যক মানুষ সংক্রমিত হয়েছে। করোনার নতুন রূপ, ওমিক্রন খুবই ছোঁয়াচে। ফলে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।
দ্বিতীয়ত, এবার করোনা পরবর্তী শারীরিক অসুস্থতাও রূপ বদলেছে। একেকজনের শরীরের একেক ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। তাই সেগুলো করোনারই প্রভাব কি না তা বুঝতে সময় লেগে যাচ্ছে। ফলে সারতে দেরি হচ্ছে।
করোনা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এবার শুধু পোস্ট-কোভিড নয় বরং কোভিডের উপসর্গেও অনেক বৈচিত্র দেখা গেছে। কেউ ভুগছেন শুধু কাশি ও গলা ব্যথায়, আবার কেউ কোমরে ব্যথা কিংবা পিঠে ব্যথায়। কারও বা আবার শুধুই পেটের সমস্যা। কেউ কেউ বলছেন ম্যালেরিয়ার মতো কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসছে।
গতবার সর্দি, জ্বর, শ্বাসের সমস্যা হওয়ায় সবাই বুঝতে পারছিলেন করোনার উপসর্গগুলো। তবে এখন করোনার যে নতুন সব সমস্যা হচ্ছে, তা বুঝতে পারছেন না অনেকে। তাই করোনা পরীক্ষাও করছেন না অনেকেই।
আর পরীক্ষা না করালে জানা যাচ্ছে না যে করোনা হয়েছে। এরপর যেসব লং কোভিডের সমস্যা দেখা দিচ্ছে, সেগুলো করোনার প্রভাবেই হচ্ছে কি না তা নির্ণয় করতে বিশেষজ্ঞদেরও হিমশিম খেতে হচ্ছে।
ভারতের চিকিৎসক অদ্রিজা রহমান মুখোপাধ্যায় গত দু’বছর ধরেই করোনা রোগীদের চিকিৎসা করছেন। তার পরামর্শ, ‘এ সময় কোনো সমস্যাই উপেক্ষা করা যাবে না। যে কোনো ধরনের উপসর্গ দেখা দিলেই পরীক্ষা করানো জরুরি। কারণ করোনার লং কোভিডের নানা ধরনের সমস্যা হচ্ছে তাও রূপ বদলেছে।ৎ
‘কারও করোনার পর ডায়াবেটিস দেখা দিচ্ছে, কারও আবার চোখের শুষ্কতা বেড়েছে। কেউ কেউ ভুগতে শুরু করছেন রিউম্যাটিক আর্থ্রাইটিসে। কারও আবার কাশি সারছেই না।’
অদ্রিজা আরও বলেন, ‘এসব সমস্যা যদি একবারে দেখা দেয় তাহলে চিকিৎসা হয় এক উপায়। আর করোনার প্রভাবে দেখা দিলে অন্য পন্থা নিতে হতে পারে।’
‘তাই এসব যখন দেখা দিচ্ছে, তখন আর শরীরে ভাইরাস থাকছে না। ফলে সে সময় পরীক্ষা করিয়ে লাভ হয় না।’ তাই এই চিকিৎসকের পরামর্শ হলো, সাধারণ কোনো উপসর্গ দেখা দেওয়া মাত্রই করোনা পরীক্ষা করাতে হবে।
সূত্র: আনন্দবাজার
Discussion about this post