হার্টবিট ডেস্ক
রাজশাহীতে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। শনাক্তের হার হঠাৎ করেই বেড়েছে।রাজশাহী জেলায় একদিনে রেকর্ড করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে রোববার (১৬ জানুয়ারি)। যাদের মধ্যে সরকারের দুই শীর্ষ কর্মকর্তা-বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকও রয়েছেন।
সোমবার (১৭ জানুয়ারি) রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল থেকে পাঠানো করোনা প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, করোনা ইউনিট গত ২৪ ঘণ্টায় আরও এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। আজ ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তিনি করোনা উপসর্গে ভুগছিলেন।
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউতে) স্থানান্তর করা হয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার ভোরে আইসিইউতেই তার মৃত্যু হয়। মারা যাওয়া ওই নারীর বয়স ৬০ বছরের মধ্যে। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে করোনা চিকিৎসার জন্য রামেক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এদিকে রামেক হাসপাতালের করোনা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা ইউনিটে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন নতুন ২ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। হাসপাতালের করোনা ইউনিটের ১০৪ শয্যার বিপরীতে বর্তমানে রোগী ভর্তি রয়েছে ৩৩ জন। এর মধ্যে রাজশাহী জেলার ২০ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ২ জন, নওগাঁর ৬ জন, নাটোরের ১ জন, পাবনা ৩ জন ও কুষ্টিয়ার ১ জন রোগী হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি রয়েছেন। এই ৩৩ জনের মধ্যে করোনা পজিটিভ রোগী রয়েছেন ৬ জন। উপসর্গ নিয়ে ভর্তি আছেন ২০ জন। আর এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়নি এমন রোগীর সংখ্যা ৭ জন।
এর আগের দিন রোববার (১৬ জানুয়ারি) রামেক হাসপাতালের আরটি-পিসিআর ল্যাবে ৮৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে ৪৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। একই দিন রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের (রামেক) ল্যাবে ১৪৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ৩১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তারা সবাই রাজশাহীর অধিবাসী। অর্থাৎ রাজশাহীতে একদিনেই ৭৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে, যা খুবই আশঙ্কাজনক।
বর্তামানে পরীক্ষার অনুপাতে রাজশাহী জেলায় করোনা শনাক্তের হার বেড়ে ৩৩ দশমিক ১৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা আগের সপ্তাহের করোনা শনাক্তের হারের প্রায় তিনগুণ। এদিকে রোববার (১৬ জানুয়ারি) নমুনা পরীক্ষার পর করোনা পজিটিভ হয়েছেন- সরকারের দুই শীর্ষ কর্মকর্তা। তারা হলেন- রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার জিএসএম জাফর উল্লাহ ও রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল। তবে, তাদের দুইজন এখনও শারীরিকভাবে সুস্থ আছেন। চিকিৎসকের পরামর্শে তারা নিজ নিজ বাসভবনেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানিয়েছেন রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কল্যাণ চৌধুরী।
রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক হাবিবুল আহসান তালুকদার জানান, তারা পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। এখনও রাজশাহী বিভাগে ওমিক্রন শনাক্ত হয়নি। তবে, জানুয়ারির শুরু থেকে করোনার শনাক্ত বাড়ছে। পরীক্ষা কম হওয়ার পরও শনাক্তের হারটা অনেক বেশি। এরই মধ্যে রাজশাহী ও নাটোর এই দুই জেলাকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে হলুদ জোনের (মাঝারি ঝুঁকিতে) আওতায় আনা হয়েছে। কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি না মানলে যেকোনো সময় এ সংক্রমণ আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর সংক্রমণ যে হারে বাড়ছে, তার মানে এটা করোনার নতুন ধরন ‘ওমিক্রন’ হওয়ারই আশঙ্কা বেশি।
ওমিক্রন খুব মারাত্মক না হলেও এই ধরন দ্রুত ছড়াচ্ছে। তাই ঘরের বাইরে বের হলেই মাস্ক পরার পাশাপাশি সরকারি সব বিধিনিষেধ অবশ্যই মানতে হবে। আর যত দ্রুত সম্ভব সবাইকে করোনা টিকাও নিতে হবে বলেও উল্লেখ করেন রাজশাহী বিভাগীয় এই স্বাস্থ্য পরিচালক। সৌজন্যে-বাংলানিউজ
Discussion about this post