হার্টবিটডেস্ক
দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজড করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এজন্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা। এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনাও (ডিপিপি) প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য এখন এটি উঠবে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক)। এর মাধ্যমে স্বাস্থ্যখাতের যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আজ বুধবার (১২ জানুয়ারি) রাজধানীর মহাখালীতে বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স অ্যান্ড সার্জন্স (বিসিপিএস) মিলনায়তনে বিভিন্ন হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স ও কম্পিউটার বিতরণ অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
মন্ত্রী বলেন, ‘পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজড করা হচ্ছে। এর জন্য উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) প্রণয়ন করছি। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে দেড় থেকে দুই হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে। সেটার কাজ চলমান আছে। এটা এখন জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) নিয়ে যাবো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য। এটা বাস্তবায়ন হয়ে গেলে দেশের স্বাস্থ্যখাতের জন্য এটি হবে আরেকটি মাইলফলক। এর মাধ্যমে স্বাস্থ্যখাতের যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবা পূর্বের চেয়ে অনেক উন্নত হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘৭২টি অ্যাম্বুলেন্স বিভিন্ন হাসপাতালে হস্তান্তর করবো। এর মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবার মান আরও উন্নত হবে। অনেকের জরুরি ভিত্তিতে এ অ্যাম্বুলেন্স প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু অনেক সময় থাকে না। উন্নত চিকিৎসার জন্য, বিশেষ করে মুমূর্ষু রোগীর জন্য, যাদের হার্ট অ্যাটাক হয়েছে বা স্ট্রোক হয়েছে—এসব রোগীর জন্য এই বিশেষ ধরনের অ্যাম্বুলেন্স। ইতিমধ্যে সারাদেশে এ রকম প্রায় একশ’ অ্যাম্বুলেন্স দেওয়া হয়েছে। আজ আরও ৮টি দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং অন্যান্য বড় হাসপাতালে দেওয়া হচ্ছে।’
অ্যাম্বুলেন্সের বিভিন্ন বৈশিষ্টের কথা তুলে ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘উন্নত এ অ্যাম্বুলেন্সের ভেতরে অনেক সুবিধা বিদ্যমান। এখানে অক্সিজেনের ব্যবস্থা আছে। হার্টের রোগীদের পাম্প করার যন্ত্রপাতি আছে। জীবন সুরক্ষার অনেক যন্ত্রপাতি আছে।’
স্বাস্থ্য সেবা প্রতিনিয়ত উন্নতকরণে বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘দেশের স্বাস্থ্য সেবা আরও উন্নত করার চেষ্টা করছি। এর অংশ হিসেবে আমাদের কমিউনিটি ক্লিনিকে যারা কাজ করেন, কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) এবং বিভিন্ন হাসপাতাল, ক্লিনিকে যারা কাজ করেন, তাদের জন্য আমরা কিছু ল্যাপটপ আমরা দিচ্ছি। এর মাধ্যমে রোগীদের সেবাসহ বিভিন্ন তথ্য আদান-প্রদান সহজতর হবে। তাৎক্ষণিকভাবে তৃণমূলের অনেক তথ্য পাওয়া যাবে। এবং প্রত্যেক দিন এটা আপডেট করা যাবে। হাসপাতালের রোগীদের সার্বিক অবস্থা জানতে পারবো। আর এটা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই হয়ে যাবে।’
এ সময় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ‘আগামী সাত থেকে সাত দিনের মধ্যে’ দেশের হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
মন্ত্রী বলেন, ‘গতকাল দেশে আক্রান্ত ছিলো আড়াই হাজার, আজ সেটি হয়ে গেছে তিন হাজার। হাসপাতালগুলোর শয্যা এখন খালি থাকলেও আগামী চার/পাঁচ দিনের মধ্যেই পরিস্থিতি পাল্টে যাবে। হাসপাতালগুলো রোগীতে পূর্ণ হতে শুরু করবে। তাই সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানায় আন্তরিক হতে হবে।’
করোনা নিয়ন্ত্রণে বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) থেকে কার্যকর ১১ দফা বিধি-নিষেধ কার্যকর হওয়ার কথা উল্লেখ করে স্বাস্থ্যবিধি না মানলে জেল-জরিমানার বিষয়ে সতর্ক করেন মন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ তীব্র গতিতে বাড়ছে। এই অবস্থায় আক্রান্তদের চিকিৎসায় আগাম প্রস্তুতি হিসেবে আরও ২০ হাজার শয্যা প্রস্তুত করতে বলা হয়েছে।
টিকাদান কার্যক্রম প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে আট কোটির বেশি প্রথম ডোজ ও পৌনে ৬ কোটি দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগ করা দেহয়েছে। ছাত্রদের ভ্যাকসিন প্রয়োগেও অগ্রগতি এসেছে।
Discussion about this post