হার্টবিটডেস্ক
নাক থেকে নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করা হলে ওমিক্রনের সংক্রমণ ধরা পড়ার সম্ভাবনা খুবই কম। প্রাথমিক পর্যায়ে ওই সংক্রমণ ধরা পড়তে পারে বরং গলা থেকে লালারসের (থ্রোট সোয়াব) নমুনা নিয়ে র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করা হলে। সাম্প্রতিক একটি গবেষণা এই দাবি করা হয়েছে।
আনন্দবাজার পত্রিকায় বলা হয়েছে, গবেষণাপত্রটি একটি আন্তর্জাতিক চিকিৎসাবিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকায় পিয়ার রিভিউ পর্যায় পেরিয়ে প্রকাশিত হতে চলেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড টি এইচ চ্যান স্কুল অব পাবলিক হেলথের এপিডিমিওলজি বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মিশেল মিনা বলেছেন, সংক্রমিত হওয়ার এক থেকে দু’দিনের মধ্যে শুধু নাক থেকে নমুনা নিয়ে র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করা হলে দেখা যাচ্ছে ওমিক্রনের উপস্থিতি টের পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু গলা থেকে লালারস নিয়ে পরীক্ষা করা হলে সংক্রমণের এক-দু’দিনের মধ্যেও ওমিক্রনের সংক্রমণ ধরা পড়ছে র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষায়। ফলে নাকের নমুনা থেকেও গলা থেকে নেওয়া লালারস ওমিক্রনের সংক্রমণ ধরার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে।
তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানিয়েছেন, নাক থেকে নমুনা নিয়ে র্যাট পরীক্ষা করানো যতটা সহজ ও নিরাপদ, গলা থেকে লালারস নিয়ে সেই পরীক্ষা ততটা সহজ ও নিরাপদ নয়। র্যাট পরীক্ষা যেহেতু বাড়িতে নিজেই করা যায়, তাই কেউ গলা থেকে লালারস নিয়ে সেই পরীক্ষা করাতে চাইলে তা নিরাপদ হওয়ার সম্ভাবনা কম। গলা থেকে লালারস নিয়ে পরীক্ষা করতে পারেন একমাত্র দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মীরাই। সেটা মাথায় রেখেই যুক্তরাষ্ট্রের ‘সেন্টার্স ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)’ বাড়িতে র্যাট পরীক্ষায় নাক থেকে নমুনা নেওয়ার চালু পদ্ধতিই আপাতত চালিয়ে যাওয়ার সুপারিশ করেছে।
সাম্প্রতিক গবেষণাটি চালানো হয়েছে নিউইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলিস ও সান ফ্রান্সিসকোয় এমন ৩০ জনের উপর যারা ফাইজার বা মডার্না অথবা জনসন অ্যান্ড জনসনের এমআরএনএ কোভিড টিকার সবকটি পর্বের পর বুস্টার টিকা নিয়েছেন। তাদের ২৮ জন পরে ওমিক্রনে সংক্রমিত হয়েছেন।
ওমিক্রনের সংক্রমণের ব্যাপারে নিশ্চিত হতে ব্রিটেনে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় গোড়ার দিকে নাক থেকে নমুনা সংগ্রহের পরিবর্তে গলা থেকে লালারস নিয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে। তবে সেটা করানো হচ্ছে একমাত্র দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মীদের দিয়েই।
গত ডিসেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকায় হওয়া আরও একটি গবেষণা জানিয়েছিল, র্যাট পরীক্ষায় গলা থেকে লালারস নিয়ে পরীক্ষা করা হলে ওমিক্রনের সংক্রমণ ধরা পড়ছে ১০০ শতাংশ ক্ষেত্রে। কিন্তু ডেল্টার সংক্রমণ ধরা পড়ছে ৭১ শতাংশ ক্ষেত্রে। আবার নাক থেকে নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করা হলে ডেল্টার সংক্রমণ ১০০ শতাংশ ক্ষেত্রে ধরা পড়লেও ওমিক্রনের সংক্রমণ ধরতে তা সফল হচ্ছে মাত্র ৮৬ শতাংশ ক্ষেত্রে।
Discussion about this post