হার্টবিটডেস্ক
দেশে পুরুষের তুলনায় নারীদের ক্যান্সারে আক্রান্তের হার বেশি বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে। এতে বলা হয়েছে, ৫৯ দশমিক ৫ শতাংশ নারী এবং ৪০ দশমিক ৫ শতাংশ পুরুষের মধ্যে ক্যান্সারের আধিক্য। আর পুরুষরা মুত্রথলি এবং নারীরা স্তন ক্যান্সারে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন।
২০১৯ সালের পুরো সময় ২২ হাজার ৮৩১ রোগীর নমুনার ভিত্তিতে এ গবেষণা করেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)।
বুধবার (৫ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগ ‘এপিডেমিওলজি অব ক্যান্সারস’ শীর্ষক গবেষণা প্রকাশ করে।
গবেষণায় বছরব্যাপী প্যাথলজিভিত্তিক ক্যান্সার রেজিস্ট্রি ও মাসব্যাপী হাসপাতালভিত্তিক ক্যান্সার রেজিস্ট্রি কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। হিস্টোপাথলজিক্যাল ডায়াগনোসিসের জন্য দেওয়া ২১ হাজার ১৭৫ জনের সলিড টিউমারের নমুনা পরীক্ষা করা হয়।
গবেষকরা বলছেন, নমুনার মধ্যে প্রায় ১৭ শতাংশ বা ৩ হাজার ৫৮৯ জনের ক্যান্সার মিলেছে। আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ নারী। নারীরা সবচেয়ে বেশি (২৩ দশমিক ৩ শতাংশ) স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত। নারীদের মধ্যে জরায়ুমুখ ক্যান্সারে ২১ দশমিক ৫ ও মুখগহ্বরের ক্যান্সারে ৮ দশমিক ৯ শতাংশ আক্রান্ত। প্রজনন ক্যান্সারেও পুরুষের চেয়ে নারীদের আক্রান্তের হার বেশি (৩২ শতাংশ)।
গবেষণায় বলা হয়, পুরুষের মধ্যে প্রোস্টেট ও মুখগহ্বর দেখা গেলেও সবচেয়ে বেশি মুত্রথলির ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন, যা প্রায় ১০ শতাংশের উপরে।
গবেষণায় ১ হাজার ৬৫৬ রোগীর তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ক্যান্সার আক্রান্তের প্রায় ৭৫ শতাংশ পূর্ণবয়স্ক ও ২৫ শতাংশ শিশু। পূর্ণবয়স্ক পুরুষদের মধ্যে ফুসফুসের ক্যান্সারে ৯ দশমিক ৬, লিউকেমিয়া ৯ দশমিক ৪ ও লিম্ফোমা ক্যান্সারে ৯ শতাংশ আক্রান্ত।
ক্যান্সার আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের মধ্যে ৪৯ দশমিক ৯ শতাংশই প্রজননতন্ত্রের ক্যান্সারে ভুগছেন। এ ছাড়া নারীদের মধ্যে ২৮ দশমিক ১ স্তন, থাইরয়েড ১৬ দশমিক ১ ও জরায়ুর ক্যান্সারে ১২ দশমিক ২ শতাংশ আক্রান্ত। পেডিয়াট্রিক বা শিশুদের ক্যান্সারের মধ্যে লিউকেমিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা সর্বোচ্চ।
গবেষণা প্রতিবেদনে বিএসএমএমইউতে ক্যান্সার রেজিস্ট্রি সহজ করার জন্য অটোমেশন পদ্ধতি চালু, সারা দেশে ক্যান্সারের সঠিক তথ্য পেতে জনসংখ্যাভিত্তিক ক্যান্সারর রেজিস্ট্রি চালুসহ আটটি সুপারিশ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০১৮ সালে বাংলাদেশে মানুষের মৃত্যুর প্রধান রোগগুলোর মধ্যে ক্যান্সারের অবস্থান ছিল ষষ্ঠ। ওই বছর দেশে ১ লাখ ৮ হাজার ১৩৭ জন ক্যান্সারে মারা যান।
Discussion about this post