হার্টবিটডেস্ক
আয়ুর্বেদ অনুসারে আপনার শরীরের বাম এবং ডান দিক আলাদা এবং আচরণও আলাদা। মজার বিষয় হলো সুস্বাস্থ্যের জন্য আপনার বাম দিকে ঘুমানো উচিত এই তত্ত্বটি আয়ুর্বেদের প্রাচীন এবং সামগ্রিক বিজ্ঞান থেকে এসেছে। বর্তমান স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও প্রায়ই পরামর্শ দেন যে আপনার বাম দিকে ঘুমানো উচিত কারণ এটি আপনার শরীরের জন্য স্বাস্থ্যকর।
আসুন জেনে নেই বাম দিকে ঘুমানোর দারুণ কিছু সুবিধা-
বাম দিকে ঘুমানো আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে উপকারী বলে মনে করা হয়। এই অবস্থানে আপনি ঘুমানোর সময় আপনার অঙ্গগুলো টক্সিন পরিত্রাণ পেতে মুক্ত থাকে। এই অভ্যাস আপনাকে স্লিপ অ্যাপনিয়া এবং দীর্ঘস্থায়ী পিঠের ব্যথা উপশমের ক্ষেত্রে সুবিধা দিতে পারে।
তাছাড়া আপনি জানলে অবাক হবেন আপনি যখন আপনার পিঠের ওপর ভর করে ঘুমান তখন আপনার জিহ্বা, মুখ এবং চোয়াল সম্পূর্ণ শিথিল থাকে। এ অবস্থায় আপনি ঘুমালে আপনার নাকডাকার বদ-অভ্যাস চালু হয়ে যাবে। তাই পিঠের ওপর ভর দিয়ে ঘুমানোর অভ্যাসটা যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, বাম দিকে ঘুমানোর অভ্যাস আপনাকে মেরুদণ্ডের চাপ থেকে মুক্তি দেয়। এভাবে ঘুমালে আপনি আরামদায়ক বোধ করবেন এবং আপনার ভালো ঘুমও হবে। তা ছাড়া এটি শিশুকে সুস্থ রাখতে প্লাসেন্টায় পুষ্টির মসৃণ প্রবাহেও সাহায্য করে। অন্তঃসত্ত্বা নারীদের যতটা সম্ভব বাম দিকে ঘুমানো উচিত কারণ এটি তাদের পিঠ থেকে চাপ কমাতে সাহায্য করে এবং জরায়ু এবং ভ্রূণে রক্তপ্রবাহ বাড়ায়।
আপনার হৃৎপিণ্ড কিন্তু আপনার বাম দিকেই তাই আপনার বাম দিকে ঘুমানো অর্থপূর্ণ কারণ এটি মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে হৃদয়ের দিকে রক্তের প্রবাহকে সহজতর করে। এটি অবশ্যই আপনার হৃদয় থেকে কিছুটা ভার নিয়ে যাবে এবং আপনার শরীরকে বিশ্রাম দেবে।
আমাদের পাকস্থলী এবং অগ্ন্যাশয় বাম পাশে অবস্থিত, একই পাশে ঘুমালে তাদের স্বাভাবিকভাবে ঝুলতে এবং আরও ভালোভাবে কাজ করতে সক্ষম করে। মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে খাদ্য সহজেই পাকস্থলীর মধ্য দিয়ে যায় এবং অগ্ন্যাশয় এনজাইম যখন প্রয়োজন হয় তখন নির্গত হয়। তা ছাড়া খাবারের বর্জ্য দূর করাও সহজ হয়ে যায়।
পরিপাকতন্ত্রের কথা বলতে গেলে বলতে হয় আমাদের হজম না হওয়া খাবার এবং টক্সিন স্বাভাবিকভাবেই ছোট অন্ত্র থেকে বড় অন্ত্রে এবং অবশেষে কোলনে চলে যায় যেখান থেকে সকালে নির্গত হয়।তাই সারারাত বাম দিকে ঘুমালে এ প্রক্রিয়া আরও সহজে সম্পন্ন হওয়ার সুযোগ পায়।
তাই দৈনন্দিন জীবনে সারা ব্যস্ততার পর যখন আপনি ঘুমাবেন একটু শান্তির আশায় তখন নিজের ইচ্ছামতো নয়, ঘুমাতে যান সঠিক নিয়ম মেনে।
Discussion about this post