হার্টবিট ডেস্ক
দিনাজপুরের হিলিতে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে জেঁকে বসেছে শীত। ঝরছে কুয়াশা। সেই সঙ্গে হিমেল হাওয়া শীতের তীব্রতা বাড়িয়েছে। এতে শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। তাদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধের সংখ্যা বেশি। প্রতিদিন গড়ে ৬০-৭০ জন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।
মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) বিকাল পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দুই শতাধিক। গত তিন দিনে এসব রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন।
হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ ধরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন ৬০-৭০ জন শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হচ্ছেন। আগে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ২৫-৩০ জন ভর্তি হতেন। রোগীর চাপে সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা বয়েজ উদ্দিন (৫২) বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, হিলিতে গত কয়েকদিন ধরে প্রচণ্ড শীত। সেই সঙ্গে কুয়াশা ঝরছে। এতে আমার শ্বাসকষ্ট দেখা দিয়েছে। এ জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি।
বেলাল হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমরা গরিব মানুষ। দিনমজুরি দিয়ে চলতে হয়। শীতে কাজে গিয়ে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। দুই দিন অসুস্থ থাকার পর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। এখন কাজ না করায় সংসার চলছে না। টাকার অভাবে ওষুধ কিনতে পারছি না। খুব কষ্টে আছি।
স্থানীয় বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমরা খেটে-খাওয়া মানুষ। শীত ও কুয়াশার মধ্যে কাজে বের হওয়ায় ডায়রিয়া দেখা দিয়েছে। এ জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি।
হাসপাতালে শিশুসন্তানকে নিয়ে আসা সুরমা খাতুন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, প্রচণ্ড ঠান্ডায় শিশুদের ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, জ্বর, শর্দি-কাশিসহ শীতজনিত নানা রোগ দেখা দিয়েছে। শিশুরা খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দিয়েছে, খেলাধুলা করছে না। শরীর দুর্বল হয়ে অবস্থা খারাপ তাদের। ঘন ঘন পাতলা পায়খানা হওয়ায় আমার সন্তানকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি।
হালিমা বেগম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমার শিশুর ডায়রিয়া হওয়ায় দুই দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি করি। শীতের সঙ্গে কুয়াশা পড়ায় শিশুর সমস্যা হয়েছে। চিকিৎসক ওষুধ দিয়েছেন, সেগুলো খাওয়াচ্ছি। এখন কিছুটা সুস্থ।
হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল কর্মকর্তা চিকিৎসক রাকিব হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, গত সাত দিন ধরে জেঁকে বসেছে শীত। এ জন্য শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়াসহ শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। প্রতিদিন ৬০-৭০ জন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। এর মধ্যে অধিকাংশ শিশু ও বৃদ্ধ।
তিনি বলেন, শীত আরও বাড়তে পারে। যতটা সম্ভব শীত থেকে দূরে থাকতে হবে। ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। শীতকালে প্রচুর শাক-সবজি পাওয়া যায়, সেগুলো খেতে হবে। ঠান্ডা পানি পান পরিহারসহ শীত যেন না লাগে সে জন্য গরম কাপড় পরতে হবে। বিশেষ করে শিশুদের যেন ঠান্ডা না লেগে সেদিকে বাবা-মাকে নজর রাখার পরামর্শ দেন এই মেডিক্যাল কর্মকর্তা।সৌজন্যে- বাংলা ট্রিবিউন
Discussion about this post