হার্টবিট ডেস্ক
ঘরে ঘরেই এমন অনেকে আছেন যারা লো ব্লাড প্রেসার বা হাইপোটেনশনে ভোগেন| ব্লাড প্রেসার মাপার পর যদি দেখা যায় রিডিং ৯০/৬০ বা তার কম হয়েছে তাহলে আপনার লো ব্লাড প্রেসার আছে|
মানুষের ব্যস্ত জীবনে বিভিন্ন অনিয়মের ফলে শরীরে রক্তচাপের ওঠানামায় প্রভাব পড়ে। অনেকেই মনে করেন উচ্চ রক্তচাপের থেকে নিম্ন রক্তচাপ কম ভয়ের। কিন্তু তা একেবারেই নয়। চিকিৎসকদের মতে, লো ব্লাড প্রেশার বা হঠাৎ প্রেশার কমে যাওয়াতেও বিপদ রয়েছে। লো ব্লাড প্রেশারের ফলে হৃৎপিণ্ডে, মস্তিষ্কে ও শরীরের অন্যান্য অংশে রক্ত সঞ্চালনের পরিমাণ কমে যায়। যার ফলে মাথা ঘোরা, দুর্বলতা এমনকী বমি বমি ভাব বেড়ে যায়।
আবার হঠাৎ প্রেশার কমে গেলেও বিপদ। শুয়ে বসে থাকা অবস্থা থেকে হঠাৎ জেগে উঠলে রক্তচাপে ব্যাঘাত ঘটে। এর ফলে স্ট্রোকের সম্ভাবনাও বাড়ে। ব্লাড প্রেশারের হঠাৎ কমে যাওয়ার ফলে শরীর ভারী লাগতে পারে। এই অবস্থায় স্বাভাবিকত্ব বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি।
জেনে নিন হঠাৎ ব্লাড প্রেশার কমে গেলে কী করবেন:
প্রতিকার
প্রেশার কমে গেলে দুশ্চিন্তা না করে নিচের নিয়মগুলো অনুসরণ করলে দ্রুত এই সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে। চলুন লো প্রেসারে করনীয়গুলো জেনে নেই!
১) খাবার স্যালাইন
প্রেশার কম হলে প্রথমেই স্যালাইন খেতে হবে। শরীরে পানিশূণ্যতা ও ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতার কারণে প্রেসার যখন কমে যায় তখন শুধু খাবার স্যালাইন খেলেই প্রেসার বেড়ে যায়। লো প্রেসারে খাবার স্যালাইন সবচেয়ে উপকারী ও তাৎক্ষণিক ফলদায়ক।
২) গ্লুকোজ
নিম্ন রক্তচাপ হলে এসময় গ্লুকোজ খেলেও ভালো উপকার পাওয়া যায়।
৩) লবণ জাতীয় খাবার
লো ব্লাড প্রেসার দেখা দিলে লবণ এবং লবণ জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত। সোডিয়াম রক্তচাপ দ্রুত বৃদ্ধি করে। তাই লবণযুক্ত খাবার খেয়ে রক্তচাপ বৃদ্ধি করতে পারেন। এছাড়া লবণ পানি পান করতে পারেন। এক গ্লাস পানিতে আধা চা চামচ লবণ মিশিয়ে প্রতিদিন দুই গ্লাস করে পান করুন। প্রেসার অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
৪) দুধ ও ডিম
দুধ ও ডিমসহ পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। মুরগীর চেয়ে হাঁসের ডিম এক্ষেত্রে বেশী কার্যকরী।
৫) কফি
কফি প্রেসার বাড়াতে বেশ কার্যকরী। সকালে নাস্তার পর এক কাপ কফি খেলে প্রেশারটা নরমাল থাকবে। চকোলেট ও ক্যাফেইন জাতীয় খাবার লো প্রেসার নিরাময় করে।
৬) কিশমিশ
কিশমিশ লো প্রেসারের রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। এক কাপ পানিতে ৩০/৪০টা কিশমিশ সারারাত ভিজিয়ে রেখে পরদিন খালি পেটে খেতে হবে। কিছুদিন নিয়মিত খেলে লো প্রেসার নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
৭) মধু ও বাদাম
লো প্রেসার নিয়ন্ত্রণে মধু ও বাদাম বেশ কার্যকর ভুমিকা পালন করে। মধু দুধে মিশিয়ে খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায় এবং কাঠবাদাম ও চিনাবাদাম খেতে পারেন। এতে প্রেসার বাড়তে পারে।
৮) পুদিনা পাতা
আশ্চর্য হলেও সত্যি যে, পুদিনা পাতা দ্রুত প্রেশার বাড়ায়। তাই প্রেশার কমে গেলে এই পাতা বেঁটে নিয়ে এর সাথে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন।
৯) ব্যায়াম
লো প্রেশার স্বাভাবিক রাখতে ব্যায়াম বেশ কার্যকর। বাদাম হার্টে রক্ত চলাচল নিয়মিত করে। লো প্রেশার দেখা দিলে খাবার খাওয়ার সাথে সাথে শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে।
১০) তাজা শাক-সবজি
নিম্ন রক্তচাপ রোধে শাক-সবজি অনেক উপকারী। কারণ ভিটামিন ও মিনারেল ঘাটতির জন্য লো প্রেশার হতে পারে। ফলিক এসিড ব্লাড প্রেশার বৃদ্ধি করে। শাক সবজি প্রচুর ফলিক এসিড থাকে।
সবশেষে কিছু টিপস দিচ্ছি- যেসব ওষুধ খেলে রক্তচাপ কমে সেসব ওষুধ ব্যবহারের ক্ষেত্রে সাবধান হতে হবে। এসময় পর্যাপ্ত পানি পান করুন। তাছাড়া অনেকক্ষণ শুয়ে বা বসে থাকার পর উঠার সময় সাবধানে বা ধীরে ধীরে উঠতে হবে। লো প্রেশারের সুনির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা নেই। ঘরে বসেই এই সমস্যা থেকে প্রতিকার পাওয়া সম্ভব। উপসর্গ অনুযায়ী এর চিকিৎসার প্রয়োজন পরে। যাদের দীর্ঘমেয়াদি লো প্রেশার আছে তাদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
Discussion about this post