হার্টবিট ডেস্ক
কেনিয়ায় অত্যাধুনিক কারখানা তৈরি করেছে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ওষুধ কোম্পানি স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। সেখানে ওষুধ উৎপাদন শুরু হবে শিগগির। ফলে কেনিয়ায় ম্যালেরিয়া ও ডায়াবেটিসের ওষুধের দাম অনেকটা কমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। তারা সাধারণত এ ধরনের ওষুধ এশীয় দেশগুলো থেকে আমদানি করে।
শুধু দাম কমানোই নয়, কেনিয়ায় নকল ওষুধের বাজার ধ্বংস করে ভোক্তাদের কাছে আসল ওষুধ আরও সহজলভ্য করে তুলবে স্কয়ারের এ উদ্যোগ। কারখানাটি অন্তত ৭০০ জনকে সরাসরি চাকরির ব্যবস্থাও করবে।
স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের বরাতে মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) এসব তথ্য জানিয়েছে কেনিয়াভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য স্টার। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেনিয়ায় প্রতি বছর ৩৫ লাখের বেশি মানুষ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন এবং মারা যান অন্তত ১০ হাজার ৭০০ জন। দেশটির পশ্চিমাঞ্চল ও রিফট উপত্যকার কিছু অংশ এ অসুখে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।
কেনিয়ানদের এমন বিপদে সহায় হয়ে উঠতে পারে স্কয়ার। দেশটির আথি রিভার ইপিজেডে প্রায় ছয় হেক্টর জায়গাজুড়ে তৈরি হচ্ছে তাদের প্রথম পর্যায়ের কারখানা। এতে ব্যয় হচ্ছে অন্তত ২৮০ কোটি শিলিং বা ২ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ২১৪ কোটি টাকা।
স্কয়ারের দাবি, কারখানাটিতে বছরে ২০০ কোটির বেশি ট্যাবলেট ও ক্যাপসুল উৎপাদন করা যাবে। ফলে সেটি হবে পূর্ব ও মধ্য আফ্রিকার সবচেয়ে বড় ওষুধ কারখানা। তাদের এ প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৪০ শিলিং (সাড়ে সাত কোটি ডলার) বা ৬৪২ কোটি টাকা প্রায়।
গত সোমবার (৬ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে স্কয়ার জানিয়েছে, কেনিয়া অ্যান্টি-ম্যালেরিয়াল, অ্যান্টি-রেট্রোভাইরাল, অ্যান্টি-হাইপারটেনসিভ, অ্যান্টি-সাইকোটিক এবং অ্যান্টি-ডায়াবেটিস ওষুধ তৈরির জন্য প্রযুক্তি এবং প্রশিক্ষণ পাবে।
সরকারি হিসাব অনুসারে, পূর্ব আফ্রিকার দেশটি বছরে অন্তত ৬০ কোটি ডলার বা ৫ হাজার ১৩৬ কোটি টাকার বেশি মূল্যের ওষুধ আমদানি করে।
স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন চৌধুরী বলেন, স্থানীয়ভাবে উৎপাদন হলে ওষুধের দাম ৪০ শতাংশ কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ), যুক্তরাজ্যের মেডিসিন অ্যান্ড হেলথ প্রোডাক্টস রেগুলেটরি এজেন্সি (এমএইচআরএ), অস্ট্রেলিয়ার থেরাপিউটিক গুডস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (টিজিএ) এবং দক্ষিণ আফ্রিকান হেলথ প্রোডাক্টস রেগুলেটরি অথোরিটির (এসএএইচপিআরএ) পাশাপাশি কেনিয়ার ফার্মেসি অ্যান্ড পয়জন বোর্ডের (পিপিবি) স্বীকৃতিপ্রাপ্ত। তাদের বাজার মূলধন প্রায় ৩০০ কোটি ডলার।
স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের মূল কোম্পানি স্কয়ার গ্রুপ। ফার্মাসিউটিক্যাল ছাড়াও টেক্সটাইল, আইটি, ব্যাংকিং, ইন্স্যুরেন্স, মিডিয়াসহ বেশ কয়েকটি খাতে বিনিয়োগ রয়েছে তাদের। স্কয়ার গ্রুপের অধীনে ২৭টি কোম্পানিতে কাজ করছেন ৬০ হাজারের বেশি কর্মী।
২০২০-২১ অর্থবছরে বিশ্বের ৪৫টি দেশে ওষুধ রপ্তানি করে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের আয় হয়েছে প্রায় ৭০ কোটি ডলার বা ৫ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা।
Discussion about this post