হার্টবিট ডেস্ক
দেশের পাঁচ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থাপিত হবে পাঁচশ’ শয্যার পূর্ণাঙ্গ বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট। মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে উপস্থাপনের তালিকায় রয়েছে প্রকল্পটি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভাপতিত্বে একনেক সভায় এ প্রকল্প চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।
হাসপাতালগুলো হলো: সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ফরিদপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
সূত্রে জানা গেছে, গত ২৫ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের এক চিঠিতে প্রকল্পটির দ্রুত অনুমোদন ও কাজ দ্রুত শুরু করতে একনেককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়।
এতে বলা হয়, ২০১৭ সালের ৭ অক্টোবর সৌদি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্টের (এসএফডি) অর্থায়নে বাস্তবায়িতব্য প্রকল্পটির জন্য বাংলাদেশ সরকার ও এসএফডি এর মধ্যে ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সমপরিমাণ ১১২.৫০ মিলিয়ন সৌদি রিয়েলের একটি ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। উক্ত ঋণচুক্তিটির গ্রেস পিরিয়ড ৫ বছর।
এতে আরও বলা হয়, ঋণচুক্তিটি স্বাক্ষরের পর প্রায় চার বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও প্রকল্পটির ডিপিপি এখনো অনুমোদন না হওয়ায় গ্রেস পিরিয়ডের সুবিধা কমে যাচ্ছে। এছাড়া প্রকল্প বাস্তবায়ন বিলম্বিত হলে ব্যয় বৃদ্ধি পাবে।
প্রকল্পের ঋণ চুক্তির মেয়াদ ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে শেষ হবে।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর প্রকল্পটির ডিপিপি অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে একনেক উইংয়ে পাঠানো হয়েছে।
বার্ন ইউনিটে যা থাকবে
এসব হাসপাতালের প্রত্যেকটিতে স্থাপন করা হবে ১০০ শয্যার পূর্ণাঙ্গ বার্ন ইউনিট। অর্থাৎ, ঢাকার বাইরে মোট ৫০০ শয্যার পরিকল্পনা করেছে বাংলাদেশ সরকার।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রতি মেডিকেল হাসপাতালে ১০টি নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র (আইসিইউ), আটটি হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট (এইচডিইউ), ১০টি কেবিন এবং নারী ও পুরুষের জন্য ৩৬টি করে বেড তৈরি হবে।
এছাড়া এই বার্ন ইউনিটে দুটি রেগুলার অপারেশন থিয়েটার এবং একটি ইমার্জেন্সি অপারেশন থিয়েটার থাকবে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ এবং সৌদি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্টের (এসএফডি) যৌথ উদ্যোগে এই হাসপাতালগুলোতে বার্ন ইউনিট নির্মাণ ও সম্প্রসারণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
এ প্রকল্পের প্রস্তাবিত ব্যয় ৪৫৬ কোটি টাকা। এটিসহ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় মোট ১০টি প্রকল্প উপস্থাপন করা হবে। এসব প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে সাত হাজার ৪৪৭ কোটি টাকা।
পাঁচ হাসপাতালে পোড়া রোগীদের চিকিৎসা
বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে কোভিড রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ওদিকে সার্জারি ওয়ার্ডের ১৪টি বেডে আপাতত অগ্নিদগ্ধ রোগীদের সেবা দেওয়া হচ্ছে।
বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মাত্র একজন চিকিৎসক দিয়ে চলতো ৫০ শয্যার বার্ন ইউনিট। গত বছরের ২৮ এপ্রিল বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগীয় প্রধান ডা. এম এ আজাদ সজলের মৃত্যর পরে বন্ধ হয়ে যায় এ হাসপাতালের বার্ন ইউনিট। এখন সেখানে আগুনে দগ্ধ রোগী গেলে ঢাকায় রেফার করতে হয়।
সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বর্তমানে মাত্র ১২ শয্যার বার্ন ইউনিট রয়েছে।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৬ শয্যার বার্ন ইউনিট রয়েছে। তারমধ্যে চারটি শয্যা নষ্ট। ওদিকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কোনো বার্ন ইউনিট নেই।
Discussion about this post