হার্টবিট ডেস্ক
লিউকোরিয়া নারীদের একটি সাধারণ ও স্বাভাবিক অবস্থা। অন্য কোন রোগের আশঙ্কা ছাড়াই যোনি থেকে নির্গত একটি সাদাস্রাব এটি। এক জন নারীর মাসিক চক্র পর্যায়ের উপর নির্ভর করে যোনির স্বাভাবিক স্রাব বিভিন্ন রঙের, পরিমাণের এবং ঘনত্বের হয়।
এটি একটি স্বচ্ছ তরল, যা যোনিকে আর্দ্র এবং পিচ্ছিল রাখে, এবং যোনিতে সংক্রমণে বাধা দেয়। আর এই জায়গাটা আর্দ্র থাকলে সুস্থ থাকে। আর্দ্রতা রাখার জন্যই আল্লাহ্ প্রদত্ব বা প্রাকৃতিক ভাবে কিছু সাদাস্রাব আসে। একজন নারীর বয়ঃসন্ধিকাল থেকে মেনোপোজ পর্যন্ত প্রাপ্তবয়স্ক জীবনে হরমোনের মাত্রার তারতম্যের কারণে লিউকোরিয়া হয়।
মেয়েদেরর্ মাসিক বা ঋতুস্রাব একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।যা একটি নির্দিষ্ট বয়স পেরোনোর পর নির্দষ্ট সময় অন্তর অন্তর চলতে থাকে এবং এটা নির্দষ্ট বয়স শেষে আবার এই প্রক্রিয়া বন্ধ হয়।তবে অনেক মেয়েদের স্বাভাবিকভাবে ঋতুস্রাব প্রক্রিয়া নাও চলতে পারে। মেয়েদের অতিরিক্ত এবং দুর্গন্ধ যুক্ত সাদাস্রাব খুব বিব্রতকর এবং জরায়ুর মুখে ইনফেকশন হওয়ার অন্যতম কারন তা নিশ্চই জানি।
আপনার যৌন স্বাস্থ্যের সমতা রক্ষা করার জন্য, সাদাস্রাব খুব গুরুত্বপূর্ণ। তবে সাদাস্রাব এর মধ্যে অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা দিলে সেটি ইনফেকশনের কারনও হতে পারে। স্বাভাবিক ভাবে মেয়েদের ১৩-১৯ বছরের , সদ্য জন্ম নেওয়া মেয়ে শিশুর (এস্ট্রজেন হরমোন এর জন্য), প্রেগনেন্সির সময় স্বাভাবিক সাদাস্রাব হয়। অতিরিক্ত মাত্রায় সাদাস্রাবের বহু কারণ রয়েছে।
আসুন জেনে নেই নারীদের সাদাস্রাব কেন হয়।আর এই সাদাস্রাব হলেই বা আপনার কী করা উচিত।
মানসিক অশান্তি
শরীরের সঙ্গে মনের একটি ভালো যোগাযোগ রয়েছে। মনের ভালো মন্দের প্রভাব অবশ্যই শরীরের ওপর পরে।তাই মানসিক চাপ হতে পারে সাদা স্রাবের অন্যতম কারণ।
পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও পুষ্টির অভাব
পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও পুষ্টির অভাব হতে পারে সাদা স্রাবের সমস্যা।তাই বিশ্রাম নেওয়ার পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে ডিম, দুধ, মাছ, মাংস , সবুজ সবজি ও ফলমূল খেতে হবে।
কৃমির সংক্রমণ
নারীদের শরীরে পুষ্টিহীনতার জন্য কৃমির কৃমির সংক্রমণ হতে পারে।আর কৃমির সংক্রমণ হলে আপনি যা-ই খান, তার একটি বড় অংশ কৃমির পেটে চলে যাবে। কৃমির সমস্যা থেকে হতে পারে সাদাস্রাব।
অপরিচ্ছন্নতা কাপড়
অপরিচ্ছন্নতা কাপড় সঠিকভাবে না শুকিয়ে স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে রেখে ব্যবহার করা মোটেই ঠিক নয়।এত করে হতে পারে সাদাস্রাবের সমস্যা।পরনের কাপড় রোদে শুকিয়ে ব্যবহার করা ভালো। স্যানিটারি ন্যাপকিন ৫ ঘণ্টা অন্তর অন্তর বদলাতে হবে।
জন্ম বিরতিকরণ পিল
জন্ম বিরতিকরণ পিল খাওয়ার কারণেও সাদা স্রাবের সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্ক্ষা থাকে।আর যদি পিল খেতেই হয় তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
এছাড়া মেয়ে শিশুর জন্মের প্রথম ৭-১০ দিনের মধ্যেও সাদা স্রাবে চাপ দিতে পারে।
মায়ের শরীরে যদি অত্যাধিক হরমোন থাকে তবেও সাদাস্রাব হতে পারে।, সন্তান প্রসবের প্রথম কয়েকদিন-ও সাদা স্রাব বেশি হতে পারে, হস্তমৈথুন বা মাস্টারবেশন করলেও এটি হতে পারে।
তবে প্রথমে ভয় না পেয়ে দেখুন ও বুঝে নিন আপনার সাদা স্রাবে আধিক্য কি অত্যাধিক নাকি স্বাভাবিক।যদি আপনার সামান্যতম সমস্যা মনে হয় তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
সাদাস্রাব এর জন্য ডায়েটঃ
১। প্রতিদিন ২ চামচ টক দই খান।
২। ভাজাপোড়া খাওয়া একদমই বাদ দিতে হবে।
৩। অ্যালার্জি যুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে।
জীবন যাত্রায় পরিবর্তনঃ
১। রাতে কম পক্ষে ৬-৮ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে।
২। বেশি রাত জাগা যাবে না।
৩। ফাস্ট ফুড পরিহার করতে হবে।
Discussion about this post