হার্টবিট ডেস্ক
আজ ২৭ নভেম্বর, শহীদ ডা. মিলন দিবস। ১৯৯০ সালের এই দিনে স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী গণঅভ্যুত্থানে চিকিৎসক নেতা ডা. শামসুল আলম খান মিলন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সামনে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন।
ডা. মিলনের রক্তদানের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নতুন গতি সঞ্চারিত হয় এবং ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরশাসনের পতন ঘটে। সেই থেকে প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন রাজনীতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন দিনটি শহীদ ডা. মিলন দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।
দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি নিয়েছে।
আজ সকাল সাড়ে ৮টায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ঢাকা মেডিকেল কলেজ চত্বরে ডা. শামসুল আলম খান মিলনের সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন, ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতের কর্মসূচি পালন করেছে। এছাড়া চিকিৎসকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. মিলনের ৩১তম মৃত্যুবার্ষিকী ও দিবসটি উপলক্ষে তারা নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিয়েছেন আলাদা বাণী। এতে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের বীর শহীদ ডা. মিলনের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন ও তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন তাঁরা।
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতকচক্রের হাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নৃশংসভাবে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশে স্বৈরশাসনের উত্থান ঘটে। শহীদ ডা. মিলনের মতো আরও অনেকের আত্মত্যাগের বিনিময়ে ১৯৯০ সালে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা লাভ করে। দেশের প্রতিটি গণতন্ত্রকামী মানুষ এসব বীর শহিদের অবদান চিরদিন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।’
প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, ‘স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ডা. মিলনের আত্মত্যাগ নতুন গতি সঞ্চারিত করে। সেদিনই দেশে জরুরি আইন ঘোষণা করা হয়। কিন্তু জরুরি আইন, কারফিউ উপেক্ষা করে ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে বারবার রাজপথে নেমে আসে। অবশেষে স্বৈরশাসকের পদত্যাগের মধ্য দিয়ে দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়।’
তিনি বলেন, ‘ডা. মিলন ছাড়াও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের এই সংগ্রামে যুবলীগ নেতা নূর হোসেন, নূরুল হুদা, বাবুল ও ফাত্তাহসহ অগণিত গণতন্ত্রকামী মানুষের রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার রাজপথ। তাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয় ভোট ও ভাতের অধিকার। গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় তাদের অবদান জাতি চিরদিন গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।’
ডা. শামসুল আলম খান মিলন পেশাগত সততা, দক্ষতা ও সাংগঠনিক কর্মতৎপরতায় ছিলেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী। তিনি তৎকালীন বিএমএ’র নির্বাচিত যুগ্ম-সম্পাদক, ঢাকা মেডিকেল কলেজ শিক্ষক সমিতির কোষাধ্যক্ষ ও কলেজের বায়োকেমিস্ট বিভাগের প্রভাষক ছিলেন। তিনি পেশাজীবী ও রাজনীতিক নেতাদের কাছে ছিলেন প্রিয়জন ও প্রিয়মুখ।
Discussion about this post