হার্টবিট ডেস্ক
মৃগীরোগের চিকিৎসায় দেশে আধুনিক মানের ইনস্টিটিউট গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
বুধবার (২৪ নভেম্বর ) রাজধানীর হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ তথ্য জানান। মৃগীরোগীদের সঠিক চিকিৎসার জন্য গাইডলাইন উদ্বোধন উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, মৃগীরোগ নিয়ে একসময় ভুল ধারণা ছিল। বলা হতো ভূতে ধরেছে। কিন্তু এটা ভুল ধারণা। গর্ভবতী মা যদি আঘাতপ্রাপ্ত হন বা প্রসবের সময় মায়ের অক্সিজেন স্বল্পতা দেখা দেয়, তবে নবজাতকের বা পরবর্তীতে ওই শিশুর মৃগীরোগের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
মন্ত্রী এ সময় তার বক্তব্যে সবাইকে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান। করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে থাকলেও মাস্ক পরতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
‘সোসাইটি অব নিউরোলজিস্ট অব বাংলাদেশ’ এর উদ্যোগে তৈরি করা এই গাইডলাইন প্রকাশের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যশিক্ষা বিভাগের সচিব আলী নূর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম ও বিসিপিএস সভাপতি অধ্যাপক ডা. কাজী দীন মোহাম্মদ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সোসাইটি অব নিউরোলজিস্ট বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ডা. ফিরোজ আহমেদ কোরাইশী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির মহাসচিব ও বিএসএমএমইউ নিউরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আবু নাসার রিজভী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসএমএমইউ নিউরোলজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ মৃগীরোগীদের সহানুভূতির সঙ্গে চিকিৎসাসেবা প্রদানের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, মৃগীরোগ বিষয়ে আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাসহ এই রোগের চিকিৎসার বিষয়ে সুযোগ-সুবিধা আরও বৃদ্ধি করা হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোলজি বিভাগ, শিশু নিউরোলজি বিভাগ ও ইন্সটিটিউট অব পেডিয়াট্রিক নিউরোডিজঅর্ডার অ্যান্ড অটিজম (ইপনা) মৃগীরোগীদের চিকিৎসাসেবায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। তিনি তার বক্তব্যে করোনা মোকাবিলায় সফল হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিশ্বে প্রায় পাঁচ কোটি লোক মৃগীরোগে আক্রান্ত। বাংলাদেশে প্রতি হাজারে ৮ দশমিক ৪ শতাংশ লোক মৃগীরোগে আক্রান্ত। সেই হিসেবে এদেশে প্রায় পৌনে ১৪ লাখ মৃগীরোগী আছে। শতকরা প্রায় ৮০ জন মৃগীরোগী উন্নয়নশীল, দরিদ্র, মধ্যম আয়ের অথবা স্বল্প বিশেষজ্ঞ সম্পন্ন দেশে বিদ্যমান। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা নিলে ৭০ ভাগ মৃগীরোগী ভালো হয়ে যান।
অনুষ্ঠানে ‘সোসাইটি অব নিউরোলজিস্ট অব বাংলাদেশ’ এর সদস্যবৃন্দ, বিএসএমএমইউ নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. হাসান জাহিদুর রহমান, সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. আহসান হাবীব, সহযোগী অধ্যাপক ডা. সুভাষ কান্তি দে সহ নিউরোলজি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা অংশগ্রহণ করেন।
Discussion about this post