হার্টবিট ডেস্ক
টেকসই মাসিক স্বাস্থ্যের জন্য পাটের সেলুলোজ-ভিত্তিক স্যানিটারি প্যাড উদ্ভাবন করে ৪র্থ বার্ষিক উদ্ভাবন পিচ প্রতিযোগিতায় গ্র্যান্ড পুরষ্কার জিতেছেন আন্তার্জাতিক উদারাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর’বি) সহকারী বিজ্ঞানী ফারহানা সুলতানা। আমেরিকান সোসাইটি ফর ট্রপিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড হাইজিন (এএসটিএমএইচ) নামক একটি সংস্থা এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।
আজ মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) আইসিডিডিআর’বির অফিসিয়াল ফেসবুকে পেজে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
সংস্থাটি জানায়, ‘আমরা এটা জানাতে পেরে আনন্দিত যে আইসিডিডিআর’বির সহকারী বিজ্ঞানী মিসেস ফারহানা সুলতানা, তার প্রস্তাবিত – টেকসই মাসিক স্বাস্থ্যের জন্য পাটের সেলুলোজ-ভিত্তিক স্যানিটারি প্যাড তৈরির জন্য একটি মেশিন উদ্ভাবনের জন্য ৪র্থ বার্ষিক উদ্ভাবন পিচ প্রতিযোগিতায় গ্র্যান্ড পুরষ্কার জিতেছেন।’
সংস্থাটির প্রতিযোগিতায় প্রথম হওয়ায় ফারহানা সুলতানাকে ৫ হাজার মার্কিন ডলার পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। একইসঙ্গে তিনি ২০২২ সালে অনুষ্ঠিতব্য ৫ম বার্ষিক উদ্ভাবন পিচ প্রতিযোগিতার বিচারক হবেন বলেও আইসিডিডিআর’বি জানিয়েছে।
পুরস্কার প্রদানকারী সংস্থাটির অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে, এ বছর উদ্ভাবন পিচ প্রতিযোগিতায় স্বল্প সম্পদের মাধ্যমে সংক্রামক রোগের জন্য আরও উন্নত স্বাস্থ্যসেবা সরঞ্জাম সরবরাহ ও এর ধারণাগুলোর উপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘মহামারী মোকাবেলায় স্থিতিস্থাপকতা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকারক প্রভাব হ্রাস করা’। ফারহানা সুলতানা ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বেশ কয়েকজন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়েছে।
গবেষণা ও কর্ম
ফারহানা সুলতানা আইসিডিডিআরবির মাসিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিভিন্ন কার্যক্রমের মূল অনুসন্ধানকারীর দায়িত্ব পালন করছেন। প্লাস্টিকের ব্যবহার কমিয়ে পাট দিয়ে প্যাড তৈরিতে এক প্রকল্পের জন্য ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের পক্ষ থেকে এক লাখ মার্কিন ডলার (প্রায় ৮৪ লাখ টাকা) মূল্যমানের পুরস্কার জিতেছেন তিনি।
এ বিষয়ে ফারহানা গণমাধ্যমকে জানান, প্রকল্পটি প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। ভারতের একটি গবেষণার তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বাজারে বাণিজ্যিকভাবে যেসব স্যানিটারি প্যাড বিক্রি হয়, তাতে ৩ দশমিক ৪ গ্রাম প্লাস্টিক থাকে। জীবনব্যাপী একজন নারী প্যাড ব্যবহার করলে প্লাস্টিকের পরিমাণ দাঁড়াবে ২৩ কিলোগ্রাম, যা মাটির সঙ্গে মিশে যেতে সময় লাগবে ৫০০ থেকে ৮০০ বছর।’
পাট দিয়ে প্যাড তৈরির আগে থেকেই মাসিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করছেন ফারহানা সুলতানা ও তাঁর দল। এ দলের শিক্ষানবিশ গবেষক মেহজাবিন তিশান মাহফুজ জানান, স্কুলে শিক্ষার্থী কেন অনুপস্থিত থাকে, তা জানার জন্য ২০১৬ সালে ঢাকা এবং মানিকগঞ্জের চারটি স্কুলে আঙুলের ছাপ নেওয়ার ডিভাইস দেওয়া হয়। স্কুলে আসার পর হঠাৎ মাসিক শুরু হলে স্যানিটারি প্যাড দেওয়া হয়। এতে দেখা যায়, মেয়েদের মধ্যে স্কুলে অনুপস্থিতি উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমেছে।
Discussion about this post