হার্টবিট ডেস্ক
সিওপিডি হলো শ্বাসতন্ত্রের দীর্ঘমেয়াদী প্রদাহ জনিত রোগ। অসংক্রামক রোগগুলোর মধ্যে এটি একটি অন্যতম শীর্ষস্থানীয় রোগ। অচিরেই পৃথিবীব্যাপী মৃত্যুর সকল কারণের মধ্যে এই রোগটির অবস্থান হবে তৃতীয়।
বুধবার (১৭ নভেম্বর) বিশ্ব সিওপিডি দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব তথ্য জানান।এবারে দিবসটির প্রতিপাদ্য হলো ‘সুস্থ ফুসফুস সর্বাধিক গুরুত্বের এখনই সময়’।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসএমএমইউয়ের রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান।
তিনি বলেন, দীর্ঘ সময়ব্যাপী বিভিন্ন বিষাক্ত ও ক্ষতিকারক উপাদান শ্বাসতন্ত্রে প্রবেশ করার ফলে শ্বাসনালী ও ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং আক্রান্ত স্থানে প্রদাহ তৈরি হয়। এছাড়াও আক্রান্ত ফুসফুসের ছোট ছোট বায়ু কুঠুরিগুলো নিষ্ক্রিয় হয়ে যায় (এমফাইসিমা) অথবা শ্বাসনালীর অংশগুলোর আবরণের ধরন পরিবর্তিত হয়ে বাড়তি মিউকাস নিঃসরণ করে এবং সিলিয়া বা প্রক্ষেপকযুক্ত আবরণীয় সংখ্যা কমে যায় (ব্রংকাইটিস)। ফলে দীর্ঘমেয়াদি কাশি, কফ নিঃসরণ ও শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি সমস্যাগুলো ধীরে ধীরে প্রছন্ন হয়ে উঠতে থাকে।
আতিকুর রহমান বলেন, বয়সের সঙ্গে সঙ্গে সমস্যাগুলো প্রকট আকার ধারণ করে এবং একসময় এমন অবস্থায় এসে পৌঁছায় যে তখন রোগী নিজের দৈনন্দিন কাজকর্ম করতেও শ্বাসকষ্টে ভোগেন। একই সাথে দানা বাঁধে সিওপিডি জনিত অন্যান্য জটিলতা যেমন- হৃদরোগ, মাংসপেশির দুর্বলতা, ওজন হ্রাস, বিষণ্ণতা, ফুসফুসের ক্যান্সার ইত্যাদি নানান ধরনের বাড়তি সমস্যা।
কারণ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ধূমপানই সিওপিডির প্রধানতম কারণ। যারা প্রতিদিন এক প্যাকেট সিগারেট দশ বছর ধরে খেয়ে চলেছেন, চল্লিশ ঊর্ধ্ব বয়সে তাদের মধ্যে প্রতি দুজনের একজন সিওপিডিতে ভুগবেন। তাই ধূমপান ত্যাগ করা সিওপিডি থেকে মুক্ত থাকার প্রধানতম উপায়। এছাড়াও বিভিন্ন প্রকার পেট্রোলিয়াম জাতীয় ধোঁয়া, লাকড়ির চুলা নিঃসৃত ধোঁয়া এবং অন্যের সেবনকৃত সিগারেটের ধোঁয়া ফুসফুসের একই ধরনের ক্ষতি করতে পারে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. নজরুল ইসলাম খান, পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. আবু নাসার রিজভী। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকালে বিএসএমএমইউয়ে শ্বাসকষ্টসহ বক্ষব্যাধির বিভিন্ন রোগের জরুরি চিকিৎসার জন্য জরুরি বিভাগ, পোস্ট কোভিড কেয়ার সেন্টার, স্লিপ ল্যাব, ব্রঙ্কোসকপি প্রসিডিউর রুম উদ্বোধন করা হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে জনসচেতনতামূলক র্যালি বের হয়, বিভিন্ন ধরনের ফলজ, বনজ ও ওষধি বৃক্ষরোপন করা হয়। এছাড়াও রাউন্ড টেবিল বৈঠক ও বৈজ্ঞানিক সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
Discussion about this post