হার্টবিট ডেস্ক
রোববার ( ১৪ নভেম্বর) ন্ধ্যায় রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে সানোফি বাংলাদেশ আয়োজিত ‘বাংলাদেশে ডায়াবেটিস : বর্তমান পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা’ সেমিনারে সেরা পাঁচ গবেষকের হাতে সংবর্ধনা স্মারক ও পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
দেশে ডায়াবেটিস নিয়ে গবেষণায় এই পাঁচ চিকিৎসক সেরা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের অক্টোবর পর্যন্ত নানা প্রকাশনার ভিত্তিতে তাদের নির্বাচন করা হয়।
স্মারক ও পুরস্কার তুলে দেন, জাতীয় অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ডায়াবেটিস সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান, বারডেম জেনারেল হাসপাতালের অ্যান্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. ফারুক পাঠান ও বারডেম জেনারেল হাসপাতালের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. জাফর এ লতিফ।
সেমিনারে জানানো হয়, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই ক্ষেত্রে আমাদের অনেক তরুণ গবেষক আছেন, যারা নিজ নিজ চিকিৎসা ক্ষেত্রে মুল্যবান অবদান রাখার পাশাপাশি বৈশ্বিক ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনা বাস্তুতন্ত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন। তাই, বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস ২০২১-এর প্রাক্কালে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো সানোফি বাংলাদেশ ডায়াবেটিস ক্ষেত্রে শীর্ষ তরুণ গবেষকদের সংবর্ধনা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। এই প্ল্যাটফর্মটি শুধুমাত্র তরুণ গবেষকদের তাদের কঠোর পরিশ্রম এবং অধ্যবসায়ের জন্য স্বীকৃতি দেয় না বরং প্রতিশ্রুতিশীল গবেষকদের ডায়াবেটিসের মত চ্যালেঞ্জিং ক্ষেত্রে আরও বেশি বেশি কাজ করার জন্য উৎসাহিত করে।
নির্বাচিত চিকিৎসকরা হলেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অ্যান্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. ফারহানা আক্তার, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অ্যান্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহজাদা সেলিম, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের অ্যান্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. এবিএম কামরুল হাসান, মার্কস মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অ্যান্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ডা. নাজমা আক্তার এবং চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. সুমন রহমান চৌধুরী।
২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে ৭ দশমিক ১ মিলিয়ন মানুষ ডায়াবেটিস নিয়ে বসবাস করছেন। ২০২৫ সালের মধ্যে এ সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
সেমিনারে মতামত উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ অ্যান্ডোক্রাইন সোসাইটির সভাপতি ও ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতাল ও গবেষণা কেন্দ্রের অধ্যাপক ডা. এস এম আশরাফুজ্জামান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আবুল হাসানাত, ন্যাশনাল হেলথ কেয়ার নেটওয়ার্কের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অধ্যাপক ডা. এম এ সামাদ প্রমুখ।
সেমিনারে অধ্যাপক মো. ফারুক পাঠান বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বের ১০তম ডায়াবেটিসপ্রবণ দেশ। বাস্তব পরিস্থিতি এর চেয়েও গুরুতর। এখনই ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। সর্বস্তরের সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা এবং ডায়াবেটিক রোগীর সেবায় সুলভে ওষুধ সরবরাহ থেকে শুরু করে অন্যান্য সহযোগী ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা খুবই প্রয়োজন।
বিজয়ীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জাতীয় অধ্যাপক এ কে আজাদ খান বলেন, রিসার্চ করার জন্য প্রয়োজন সূক্ষ্ম বিশ্লেষণী ক্ষমতা এবং স্বচ্ছ চিন্তাধারা। ছাত্ররা রিসার্চে উৎসাহিত হচ্ছে এটা অনেক আনন্দের বিষয়। তিনি আরও বলেন, মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ছে কিন্তু এটাকে কার্যকর করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে না। জীবনধারার পরিবর্তন জরুরি কিন্তু কেউ করছে না। কীভাবে বললে মানুষ অনুপ্রাণিত হবে সেই সম্পর্কে আরও ভাবতে হবে।
সবশেষে তিনি বলেন, ডায়াবেটিস-কে প্রতিহত করা সম্ভব। আপনি করেছেন কি?
এই একটি লাইনের মাধ্যমে অধ্যাপক খান প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ গবেষকদের চ্যালেঞ্জ করেন যাতে তারা এই ক্ষেত্রে আরও অধিক মননিবেশ করেন আর তবেই আমাদের দেশ এবং রোগীরা সামনের দিনগুলোতে সুচারুরূপে ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনা করতে পারবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সানোফি বাংলাদেশ লিমিটেডের পরিচালক (মেডিক্যাল অ্যাফেয়ার্স) ডা. মাহমুদ আবেদিন খান এবং হেড অফ বিজনেস এ বি এম আশরাফুল আলম।
Discussion about this post