ডা. ফরিদা ইয়াসমিন সুমি
অনেক সময় খুব অল্প বয়সে, যেমন ৯-১০ বছর বয়সে কোনো কোনো মেয়ের ঋতুস্রাব শুরু হয়ে যেতে পারে বা যৌবন আরম্ভের লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে পারে। এতে মেয়ের অভিভাবকেরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। মেয়েটিও অস্বস্তিকর এক মানসিক সমস্যায় ভুগতে শুরু করে।
- শতকরা ৯০ ভাগ ক্ষেত্রে কম বয়সে ঋতুস্রাব কোনো রোগের কারণে হয় না, এটি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ব্যাপার। ৯-১০ বছর বয়সে ঋতুবতী হওয়া বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মেয়েদের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য। এর জন্য অহেতুক দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই।
- এ সময় বেশি দরকার মেয়েটিকে আশ্বস্ত করা। অভিভাবকদের এই ভূমিকা মেয়েটির আতঙ্ক বা ভয় কমাতে সহায়ক হবে।
- শতকরা মাত্র ১০ জনের ক্ষেত্রে কিছু শারীরিক রোগের কারণে কম বয়সে মাসিক হতে পারে। জন্মগত কিছু ত্রুটি, মেনিনজাইটিস বা মস্তিষ্কের অন্য কোনো রোগ, পিটুইটারি গ্রন্থি বা ডিম্বাশয়ের নির্দিষ্ট কিছু টিউমার হলে এ রকম হতে পারে।
- ৯-১০ বছরের চেয়ে কম বয়সে কোনো মেয়ে ঋতুবতী হলে এবং তার সঙ্গে অন্য কোনো উপসর্গ থাকলে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
বয়সের পরে ঋতুস্রাব হলে
অনেক সময় দেখা যায় ১৫-১৬ বছর বয়সেও কোনো মেয়ে ঋতুবতী হলো না বা যৌবনের অন্যান্য লক্ষণও এল দেরি করে। এটি খুব একটা চিন্তার ব্যাপার নয়। ১৬ বছর বয়সেও ঋতুবতী হয়নি এমন মেয়ের শতকরা ৯৯ জনের ১৮ বছর বয়সের ভেতর ঋতুস্রাব আরম্ভ হয়ে যায়। পরবর্তী জীবনে তারা আর দশজন স্বাভাবিক নারীর মতোই সন্তান জন্মদানে সক্ষম হয়।
- অল্প কিছু ক্ষেত্রে শরীরের কিছু রোগ বা যৌন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কোনো ত্রুটির কারণে প্রথম ঋতুস্রাব শুরু হতে দেরি হতে পারে। বিলম্ব হওয়ার সঠিক কারণ খুঁজে বের করে চিকিৎসা করলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সমস্যা মিটে যায়।
- ১৮ বছরের আগে প্রথম ঋতুস্রাব না হলে দেখতে হবে, মেয়েটির শরীরে অন্য কোনো রোগের উপসর্গ আছে কি না। এ রকম হলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
- তবে কোনো রোগের উপসর্গ নেই, সব দিকেই সুস্থ-সবল, শুধু মাসিক শুরু হতে দেরি হচ্ছে, সে ক্ষেত্রে ১৮ বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করা যায়।
গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, এ নিয়ে অহেতুক চিন্তা করবেন না বা মেয়েটির মনে অমূলক ভয়ভীতি ছড়িয়ে পড়তে দেবেন না। প্রয়োজনে চিকিৎসকের কাছে যান। নিজে আশ্বস্ত হোন, মেয়েকেও আশ্বস্ত করুন।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক, প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ
Discussion about this post