হার্টবিট ডেস্ক
প্রাণঘাতী করোনার চিকিৎসায় মার্কিন কোম্পানি ফাইজারের তৈরি ট্যাবলেটে অধিক ঝুঁকিতে থাকা প্রাপ্তবয়স্কদের মৃত্যুঝুঁকি ৮৯ শতাংশ কমাতে সাহায্য করে। স্থানীয় সময় শুক্রবার (৫ নভেম্বর) ওই ওষুধের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সম্পর্কে জানাতে গিয়ে এমন তথ্য তুলে ধরে ফাইজার।
তাদের দাবি, এ ওষুধ ব্যবহারে অধিক ঝুঁকিতে থাকা প্রাপ্তবয়স্কদের করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তির হারও সমানভাবে কমায়।
বিবিসি জানিয়েছে, ফাইজারের তৈরি এই ট্যাবলেটের নাম প্যাক্সলোভিড। মূলত গুরুতর রোগের অধিক ঝুঁকিতে থাকা মানুষের মধ্যে করোনার উপসর্গ দেখা দেওয়ার পর ব্যবহারের জন্য এই বড়ি তৈরি করা হয়েছে।
এদিকে প্রাথমিক ফলাফল খুব ইতিবাচক হওয়ায় আগেভাগেই এই বড়ির ট্রায়াল বন্ধ করে দিয়েছে ফাইজার।
ট্রায়ালে অধিক ঝুঁকিতে থাকা এবং সম্প্রতি কোভিডে আক্রান্ত ১ হাজার ২১৯ জনকে প্যাক্সলোভিড বড়ি খাওয়ানো হয়। তাতে দেখা যায়, এসব মানুষের মধ্যে মাত্র দশমিক ৮ শতাংশ হাসপাতালে ভর্তি হন। বিপরীতে প্লেসবো (ওষুধ বলে দেওয়া হয়, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা ওষুধ নয়) দেওয়া রোগীদের ক্ষেত্রে এই হার ৭ শতাংশ।
ফাইজার জানিয়েছে, কোভিডের উপসর্গ দেখা দেওয়ার তিন দিনের মধ্যে প্লেসবো নেওয়া সাতজন মারা গেলেও এই বড়ি খেয়ে কেউ মারা যাননি। এ ছাড়া উপসর্গ দেখা দেওয়ার পাঁচ দিন পর ১ শতাংশ হাসপাতালে ভর্তি হলেও কারও মৃত্যু হয়নি। বিপরীতে প্লেসবো নেওয়া ৬ দশমিক ৭ শতাংশ হাসপাতালে ভর্তি হন এবং ১০ জন মারা যান।
ফাইজারের এই বড়ির ট্রায়ালের ফল এখনো প্রকাশ বা যাচাই করা হয়নি। ট্রায়ালে অংশ নেওয়া রোগীরা বয়স্ক এবং আগে থেকে নানা রোগে আক্রান্ত। এ কারণেই কোভিডে আক্রান্ত হলে তাঁদের অসুস্থতা গুরুতর হওয়ার ঝুঁকি বেশি। এ ছাড়া তাঁদের সবারই করোনাভাইরাসের হালকা থেকে মাঝারি উপসর্গ ছিল।
ফাইজার জানিয়েছে, তাদের তৈরি বড়ির জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন পেতে গত মাসে তারা যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা এফডিএর কাছে আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এবার অন্তর্বর্তীকালীন ট্রায়ালের এ ফলাফল এফডিএতে দাখিল করবে।
ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ ফাইজারের এই ট্রায়ালের ফলকে অসাধারণ অভিহিত করে বলেন, এফডিএ এখন এর কার্যকারিতা ও সুরক্ষার বিষয়টি মূল্যায়ন করে দেখবে। অনুমোদন পেলে করোনার বিরুদ্ধে টিকার পাশাপাশি এটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ রক্ষাকবচ হবে বলে জানান তিনি।
Discussion about this post