হার্টবিট ডেস্ক
সরকার রাজধানীর আজিমপুরে পরিত্যক্ত ভবনের স্থানে নতুন ভবন নির্মাণ করতে যাচ্ছে। এজন্য আজিমপুরে অবস্থিত মাতৃসদন ও শিশু স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত চিকিৎসক, কর্মকর্তা, সিনিয়র স্টাফ নার্স ও প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য হোস্টেল বা ডরমিটরি নির্মাণ শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৪ কোটি ৩৩ লাখ ৫৭ হাজার টাকা।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে নিরবচ্ছিন্ন মানসম্পন্ন মা ও শিশুস্বাস্থ্য সেবা, প্রজনন স্বাস্থ্য সেবা, পরিবার পরিকল্পনা সেবা এবং সময়োপযোগী প্রশিক্ষণ ও গবেষণার চেকসই উন্নয়নের জন্য আজিমপুর মাতৃসদন ও শিশু স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সেবাদাতা ও আগত প্রশিক্ষণার্থীর আবাসন সুবিধা নিশ্চিতকরণ করা হবে বলে মনে করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর চলতি বছরের ১৫ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় পিইসি (প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি) সভা। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো প্রতিপালন করায় প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে মধ্যে এটি বাস্তবায়ন কাজ শেষ করবে পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতর।
প্রকল্প প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, ১৯৫৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ঢাকার আজিমপুর মাতৃসদন ও শিশুস্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানটি সমগ্র ঢাকা শহরসহ পার্শ্ববর্তী কেরানীগঞ্জের প্রায় ১৫ লাখ লোকের নিকট একটি আদর্শ মা ও শিশু স্বাস্থ্য তথা প্রজনন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এ কেন্দ্রে আগত ক্রমবর্ধমান সেবা নেওয়া রোগীদের সেবা নিশ্চিত করার জন্য চিকিৎসকসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরির সর্বমোট ২২১ জন জনবল দিয়ে সার্বক্ষণিক সকল সেবাদাতাদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য ২০০১ সালে এ কেন্দ্রটিকে ১৭৩ শয্যায় উন্নীত করা হয়। হাসপাতালে গুণগত সেবার সুনাম বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে রোগীদের চাপ বৃদ্ধি পেতে থাকে।
প্রতিদিন আউটডোর ইউনিটে ৭০০ থেকে ৮০০ জন এবং ইনডোরে ১০০ শতাংশ রোগী ভর্তি থাকে। এ হাসপাতালে আসা জরুরি প্রসূতি সেবাসহ সকল প্রকার রোগীদের সার্বক্ষণিক চিকিৎসকসহ সকল সেবাদাতাদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হাসপাতালের সঙ্গে নিজস্ব জমিতে হাসপাতালের পুরাতন বাসভবনের স্থলে চিকিৎসক ও অন্যান্য সেবাদাতাদের জন্য ভবন ও ডরমিটরি নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
জনবহুল পুরান ঢাকার আজিমপুরে জমির দুষ্প্রাপ্যতা, হাসপাতালের চিকিৎসকদের যাতায়াতে যানজটের সমস্যা এবং চিকিৎসকসহ সেবাদাতাদের আবাসিক সমস্যার সমাধান করে হাসপাতালের সকল সেবাদাতাদের জন্য কোয়ার্টার নির্মাণ তথা আবাসিক সমস্যার সমাধানের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্য ও প্রকৌশল অধিদফতরের সহযোগিতায় পরিত্যক্ত কোর্য়াটারের স্থলে বহুতল ভবন নির্মাণের প্রকল্প নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতর।
প্রস্তাবিত প্রকল্পটিতে ১৫ তলা বিশিষ্ট দুটি ভবন নির্মাণ করা হবে। আর ভবন দুটির ভূগর্ভস্থ অংশ একত্রিত করে গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য দুটি বেইজমেন্ট ফ্লোর নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এখানে মাতৃসদনে কর্মরত চিকিৎসক ও কর্মকর্তাদের গাড়ী পার্কিং করা হবে। প্রস্তাবিত প্রকল্পের মাধ্যমে দুটি ভবন নির্মিত হলে একটি একাডেমিক কাম হোস্টেল ভবন এবং অপরটি মাতৃসদনে কর্মরত চিকিৎসক, কর্মকর্তাসহ অন্যান্য সেবাদাতাদের আবসিক ভবন হিসাবে ব্যবহার করা যাবে।
Discussion about this post